শিল্পপতি অনিল আম্বানির মুম্বইয়ের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি। একই সঙ্গে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বাড়িতেও চলছে তল্লাশি। ইতিমধ্যেই সিবিআই অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে। বলা যেতে পারে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অনিল আম্বানির বিপদ আরও বাড়ল। কারণ সিবিআইয়ের আগেই ইডি এই শিল্পপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, সিবিআই ২০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক প্রতারণার অভিযোগে শনিবার সকালে অনিল আম্বানির মুম্বইয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এদিন সকাল ৭টা নাগাদ অনিল আম্বানির কুফে প্যারেডের সিউইন্ড বাড়িতে পৌঁছন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। ওই প্রতিনিধি দলে বেশ কয়েকজন ছিলেন। দীর্ঘসময় ধরে তল্লাশি চলে বলে খবর। শিল্পপতির স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতেই তল্লাশি শুরু করেন সিবিআই কর্তারা।
এর আগে চলতি মাসের প্রথম দিকে ৪ অগস্ট ইডি ব্যাঙ্ক প্রতারণার অভিযোগে অনিল আম্বানির বিভিন্ন সংস্থার অফিসেও তদন্ত করেছিল। পাশাপাশি আর্থিক তছরুপ দমন আইনে অনিলের বিরুদ্ধে সমন জারি করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সমন অনুযায়ী অনিল পৌঁছে গিয়েছিলেন ইডির দফতরে। ২৪ জুলাই আম্বানির বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। মুম্বই, দিল্লি-সহ দেশের মোট ৩৫টি জায়গায় অনিলের বিভিন্ন সংস্থার অফিসে চলে তল্লাশি। ইতিমধ্যেই অনিল আম্বানির ৫০ টিরও বেশি সংস্থা এবং ২৫ জন পদস্থ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক, লগ্নিকারি সংস্থা এবং সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ পাইয়ে দিতে ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তাদের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অনিলের সংস্থা রাগা গ্রুপের একাধিক সংস্থাকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক। ইডির শীর্ষ কর্তাদের দাবি, ঋণ দেওয়ার আগে ইয়েস ব্যাঙ্কের তৎকালীন প্রোমোটাররা নিজেদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত সংস্থায় টাকা পেয়েছিলেন। যা ছিল একটি বেআইনি ‘কুইড প্রো কো’ চুক্তি।
অনিল আম্বানির সংস্থা আর কম অবশ্য আগেই নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। সংস্থার বিরুদ্ধে ১৭ হাজার কোটি টাকার তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নেওয়া ২০০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে পাওনাদারদের দেনা মেটানোর চেষ্টা করছেন অনিল। তবে সমস্যা এখনও মেটেনি। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই মোদি সরকার জানিয়েছিল, স্টেট ব্যাঙ্ক এবার অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছে। স্টেট ব্যাঙ্কের দায়ের করা সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত বলে খবর। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্ক মনে করছে রিলায়েন্স তাদের টাকা যথাযথ খাতে ব্যবহার না করে নয়ছয় করেছে। সেকারণেই দেউলিয়া অবস্থা। ঋণ হিসেবে নেওয়া টাকা নয়ছয় হয়েছে কিনা তা জানতেই সিবিআইয়ের এই তল্লাশি অভিযান। এর আগে ২০২০ এবং ২০২৩ সালেও অনিল আম্বানিকে তলব করেছিল ইডি।