পথকুকুরদের নিয়ে ফের কলম ধরলেন বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতা-প্রযোজক জন আব্রাহাম। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পরিমার্জিত রায় ঘিরে কৃতজ্ঞতা জানাতে সমাজমাধ্যমে পোস্ট। বলিউড অভিনেতা PETA ইন্ডিয়ার মাধ্যমে একটি বিবৃতি শেয়ার করেছেন।
বিবৃতিতে লেখা, “পথকুকুরদের পক্ষ থেকে শীর্ষ আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সবাই থাকলে ভাল। তাছাড়া রাস্তা থেকে কুকুরদের সরিয়ে ফেলা ঠিক নয়। বরং তাদের জীবানুমুক্তকরণ এবং টিকাদানকে গুরুত্ব দিতে হবে। আর এই কাজে ফিডারদের ভূমিকা কিন্তু অনস্বীকার্য। তাঁদের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদান জরুরি। পুরসভাগুলির ভূমিকাও কম নয়। পথকুকুরদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ কর্মসূচি আর প্রতিটি গলিতে ফিডিং স্টেশন রাখা নিশ্চিত করতে হবে।“
শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের আগের কড়া রায় থেকে সরে এসেছে। জানিয়েছে সমগ্র দিল্লি সহ পার্শ্ববর্তী হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের জেলাগুলি থেকে সমস্ত বেওয়ারিশ কুকুরকে জীবাণুমুক্ত করে ছেড়ে দিতে হবে। অ্যাপেক্স কোর্টের বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চের এই নতুন রায়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জন।
আগস্ট মাসের শুরুতে, সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি এবং এনসিআরের ( National Capital Region) সমস্ত বেওয়ারিশ কুকুরকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ধরে বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানায়, একবার একটি কুকুর ধরা পড়লে, তাকে আবার রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
বেওয়ারিশ পথকুকুরদের ক্রমবর্ধমান আক্রমণের শিকার সংক্রান্ত মামলার প্রেক্ষিতেই দেওয়া হয়েছিল এমন রায়। আদালত আরও জানায়, পথকুকুরদের ধরা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা চললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য পদক্ষেপ করা হবে। পথকুকুরের কামড়ের ঘটনা রিপোর্ট করার জন্য দিল্লি সহ এনসিআর-এ একটি হেল্পলাইন চালু করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।
শীর্ষ আদালতের সেই কড়া রায়দানের জেরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। পথকুকুরদের পক্ষ নিয়ে অনেক সেলিব্রিটির মতো সরব হয়েছিলেন জন আব্রাহামও। তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। সেখানে শীর্ষ আদালতের এমন কড়া রায়টিকে পর্যালোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
সমাজ মাধ্যমে জন আব্রাহামের সেই পোস্টও নজর কেড়ে নিয়েছিল। লিখেছিলেন, “এরা পথভ্রষ্ট কুকুর নয় বরং কমিউনিটির কুকুর। পাড়ার অনেকের কাছেই তারা খুব আদরের ও প্রিয়। দিল্লিবাসীরা তাঁদের নিজস্ব অধিকারে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এদের দেখে আসছেন। পথকুকুরগুলিও প্রতিবেশী হিসেবে সেখানে থাকে। তাই বেওয়ারিশ কুকুর হিসেবে গণ্য করে জনসাধারণের কাছ থেকে এদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র বা দূরবর্তী এলাকায় পাঠানোর নির্দেশ আর একবার পর্যালোচনার অনুরোধ জানাই “।