”ভাষা হারিয়ে ফেলছি, এমন অনন্য সম্মানে আমি অভিভূত”। মুম্বই এর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজের পূর্ণাবয়ব ব্রোঞ্জ মূর্তির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন সুনীল গাভাসকর। শনিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের শরদ পাওয়ার ক্রিকেট মিউজিয়ামে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের আবক্ষমূর্তিটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ওয়াংখেড়ের ক্রিকেট মিউজিয়ামটি দেখার সুযোগ মিলবে সর্বসাধারণের।
ডান হাতে ব্যাট উঁচিয়ে ১০ হাজারের মাইলফলককে স্পর্শের উচ্ছ্বাস। লিটল মাস্টারের সেই ঐতিহাসিক ছবির ফ্রেমকে মূর্তিতে ধরার চেষ্টা। শরদ পাওয়ার ক্রিকেট মিউজিয়ামের ঠিক বাইরে বসেছে আবক্ষ মূর্তিটি। স্বভাবতই মিউজিয়ামে প্রবেশের আগেই এটি নজর কেড়ে নেয়। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ১০ হাজার রান, ক্রিকেটকে ঘিরে তাঁর আবেগ। কিংবদন্তী ক্রিকেটারকে সম্মান জানাতেই ওয়াংখেড়ের ক্রিকেট মিউজিয়ামের জন্য তৈরি হয়েছে ব্রোঞ্জের মূর্তিটি। শনিবারের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে, ছিলেন বিসিসিআই এবং আইসিসি-র প্রাক্তন সভাপতি শরদ পাওয়ার।
.অনুষ্ঠানে নিজের ক্রিকেট জীবনের শুরুর দিনগুলোর কথা স্মরণ করেছেন আবেগ তাড়িত লিটল মাস্টার। বলেছেন, মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আসলে তাঁর মায়ের মতো। বোম্বে স্কুলের হয়ে প্রথমবার খেলতে এসে জড়িয়ে পড়েছেন মায়ের সেই বাঁধনে। তারপর ক্লাব ক্রিকেট, মুম্বই-এর হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলা, জাতীয় দলে সুযোগ… সবকিছুই তাঁর কাছে পরম সৌভাগ্য এবং আশীর্বাদ। এমসিএ-র সঙ্গে তাঁর সেই বাঁধন এখনও অটুট রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কমবেশি চার দশক আগে সক্রিয় ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া কিংবদন্তী ক্রিকেটার।
শরদ পাওয়ার মিউজিামে গাভাসকরের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর ১০,০০০ রান করার ঐতিহাসিক কৃতিত্বকে স্মরণ করে তৈরি। ১৯৮৭ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আহমেদাবাদ টেস্টের সময় তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করার বিরল কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তিনিই প্রথম যিনি এই মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন। সেদিন গাভাসকরের অনন্য রেকর্ডের জেরে আবেগতাড়িত ক্রিকেটপ্রেমীরা গ্যালারি টপকে ঢুকে পড়েছিল মাঠে। যার কারণে কমবেশি ৩০ মিনিট বন্ধ থাকে ভারত -পাকিস্তানের টেস্ট ম্যাচটি।
মূর্তি উন্মোজনের অনুষ্ঠান শেষে গাভাসকর সংবাদিকদের বলেন,” খুব ভালো স্মৃতি, সেই বল, সেই সময়… ১০০০০ রান… ফের মনে করিয়ে দিল। আমি অভিভূত, খুব কমজনের ভাগ্যেই কিন্তু এমন সম্মান জোটে।” তাঁর দীর্ঘ ক্রিকেট যাত্রার সকল পর্যায়ের সতীর্থদের এই সম্মাননা উৎসর্গ করেছেন লিটল মাস্টার ।
বাইশ গজকে চার দশক আগে বিদায় জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর হৃদয় এখনও বাঁধা রয়েছে ভারতীয় ড্রেসিং রুমে। দাবি করলেন কিংবদন্তী ক্রিকেটার। বলেন,”জাতীয় দলের ক্রিকেটের সঙ্গে আবেগগত ভাবে যুক্ত রয়েছি। ভারত জিতলে তাই আবেগে-আনন্দে লাফাই, খারাপ খেললে মন খারাপ হয়। দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কিন্তু খুব কঠিন। ”