আমার মেয়েকে যারা চরম অত্যাচার করে পুড়িয়ে মেরেছে তাদের গুলি করে মারা হোক। অভিযুক্তেরা যেন কোনওভাবে পার না পায়। দাবি করলেন উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার মৃত যুবতী নিকি ভাটির বাবা ভিখারি সিং। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
৯ বছর আগে গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা বিপিন ভাটির সঙ্গে মেয়ে নিকির বিয়ে দিয়েছিলেন ভিখারি সিং। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে পণের জন্য নিকির উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাদ যাননি স্বামী বিপিনও। পণের দাবিতে নিত্যদিন বিপিন এবং নিকির মধ্যে অশান্তি হত। সম্প্রতি শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিকিকে তার বাবার কাছ থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। ৩৬ লক্ষ টাকা না পাওয়ায় নিকির উপর অত্যাচারের মাত্রা চরমে ওঠে।
বৃহস্পতিবার মারধরের পর নিকির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় নিকির।
নিকির মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমের সামনে নিকির বাবা বলেন, “ওরা খুনি। পুলিসের উচিত ওদের এনকাউন্টারে গুলি করে মারা। ওদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হোক। ওরা সবাই মিলে আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করত। সকলেই এই ঘৃণ্য চক্রান্তে যুক্ত। ওদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। আমার মেয়ে ও নাতিকে ওরা দেখত না। তাই নিকি একটা পার্লারের কাজ করে ছেলেকে মানুষ করছিল। সেটাও ওরা সহ্য করতে পারল না।”
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে মেয়ের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে বাবার প্রশ্ন, সরকার পকেটমারদের গুলি করতে পারে তাহলে খুনিদের মারবে না কেন? নিকির বাবার অভিযোগ, বিপিন অন্য কোনও মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাই তার পথ থেকে নিকিকে সরানোর সিদ্ধান্ত।
নিকির দিদি কাঞ্চনেরও ওই বাড়িতেই বিয়ে হয়েছে। । বিপিনের দাদা রোহিতের স্ত্রী কাঞ্চন। কাঞ্চনের অভিযোগের ভিত্তিতে কাসনা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশের কাছে কাঞ্চন তাঁর অভিযোগে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিকিকে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ি মিলে বেধড়ক মারধর করে। কাঞ্চন বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। চুলের মুঠি ধরে সিঁড়ি দিয়ে টানতে টানতে নিকিকে নীচে নিয়ে আসে বিপিন। তার পর গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে শনিবারই গ্রেফতার হয়েছেন নিকির স্বামী বিপিন। তবে পরিবারের অন্য লোকজন সকলেই পালিয়ে গিয়েছে। বাবা বিপিন, ঠাকুমা, দাদু, জেঠু এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে কীভাবে তার মাকে খুন করেছে, পুলিশের কাছে সেই বর্ণনা দিয়েছে নিকির ৭ বছরের ছেলে।