গত লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, ব্যাপক কারচুপি ও ভোট পরবর্তী হিংসা ঘিরে দায়ের হয়েছিল মামলা। ফলপ্রকাশের পর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস (ববি)। কলকাতা হাইকোর্টের সেই মামলায় হলফনামা জমা দিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে সেকারণেই আচমকা চলে আসেন কলকাতা হাইকোর্টে।
হাইকোর্ট সূত্রে খবর, অ্যাকাউন্টস সেকশনে হলফনামায় স্বাক্ষর করেছেন ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ। তারপরই সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে আচমকা কাছে পেয়ে ততক্ষণে হাইকোর্টের বেশ কিছু আইনজীবী ঘিরে ধরেন। ছবি, সই ও সেলফি তোলার অনুরোধও আসে। কাউকে নিরাশ করেননি লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা। প্রায় প্রত্যেকের আবদার মিটিয়েছেন অভিষেক। আর তারপরই নিঃশব্দে হাইকোর্ট চত্বর ছেড়েছে তাঁর কনভয়।
কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সুগত মজুমদারের বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস(ববি)-এর দায়ের করা মামলা। কমবেশি ৭ মাস পরে চলতি বছরের এপ্রিলে, মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানি পর্বে হাইকোর্ট নির্বাচনী এলাকার তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ এবং ডিজিটাল রেকর্ড সহ নির্বাচন-সম্পর্কিত সমস্ত উপকরণ সংরক্ষণের নির্দেশও জারি করেছে। নির্বাচন কমিশন এবং জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তাকে এই উপকরণগুলি রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৯ আগস্টের শুনানি পর্বে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুগত মজুমদার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হলফনামা জমা না দেওয়া ঘিরে সতর্ক করেছেন। জানানো হয়েছে নির্বাচনী আবেদনের জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা আদেশ কিন্তু জারি করা হতে পারে। অভিষেকের আইনজীবীরা আরও সময় চেয়েছিলেন। তবে, আদালত ২৮ আগস্টের মধ্যেই জবাব দেওয়ার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়।
হাইকোর্টের এমন কড়া অবস্থানের জেরেই পাল্টা হলফনামা জমা দিতে নথিপত্রে স্বাক্ষর করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তাঁর হয়ে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেওয়া আইনজীবীরাই এবার সেই সমস্ত নথিপত্র হলফনামা আকারে জমা করবেন। হাইকোর্ট সূত্রে খবর, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ সেপ্টেম্বর।
প্রসঙ্গত ২০২৪ সালে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে রেকর্ড ভোটে জিতে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পেয়েছেন মোট ১০ লক্ষ ৪৮ হাজার ২৩০টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অভিজিৎ দাস পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩০০টি ভোট। অভিষেকের জয়ের ব্যবধান দাঁড়ায় প্রায় ৭ লক্ষ ১১ হাজার (৭ লক্ষ ১০ হাজার ৯৩০)। অভিষেকের এই বিশাল ব্যবধানে লোকসভা ভোটে জয়, রাজ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের আগের রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে।