কয়েকদিন ধরে রাজ্যজুড়ে বেঙ্গল ফাইলস নিয়ে নানা চর্চা চলছে। কয়েকদিন আগেই বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবির ঝলক মুক্তি পেয়েছে। এই ছবিতে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। যদিও কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে বেঙ্গল ফাইলসের ঝলক মুক্তির অনুষ্ঠানে ছিলেন না শাশ্বত। এরই মধ্যে শাশ্বতকে নিয়ে মুখ খুললেন বিবেকের অভিনেত্রী স্ত্রী পল্লবী জোশি। পল্লবীর দাবি, শাশ্বত ভয় পেয়েছেন।
বেঙ্গল ফাইলস ছবির ঝলক নিয়ে যখন কলকাতায় নানা বিতর্ক দানা বেঁধেছিল, কিছুটা উত্তেজনাও ছড়িয়েছিল তখন শাশ্বত জানিয়েছিলেন, তিনি এই ছবির চিত্রনাট্যের বিষয়ে পুরোপুরি জানতেন না। তাঁকে শুধু তাঁর চরিত্রের বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
বাঙালি অভিনেতার এই মন্তব্যে প্রবল ক্ষুব্ধ পল্লবী। বেঙ্গল ফাইলসের পরিচালকের স্ত্রীর দাবি, খুব সম্ভবত শাশ্বত ভয় পেয়েছেন।তাই তিনি ছবির পাশে নেই। শাশ্বত একজন পেশাদার অভিনেতা। তিনি সিনেমার সঙ্গে যুক্ত একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তার অভিনয়ে প্রতিভাকে তিনি সম্মান করেন। একাধিক ছবিতে তিনি যথেষ্ট দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। শাশ্বতর বাবাও ছিলেন একজন স্বনামধন্য অভিনেতা। কিন্তু তিনি সম্ভবত ভয় পেয়েছেন। সে কারণেই বলছেন, ছবির পুরো চিত্রনাট্য তিনি জানতেন না। পল্লবী আরও বলেছেন, তিনি ভেবেছিলেন শাশ্বত সাহস করে এগিয়ে আসবেন। ছবির পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু তাঁর সেই ভাবনা যে একেবারেই ভুল ছিল শাশ্বতর কথাতেই তার প্রমাণ মিলল। সম্ভবত কোনও চাপের কাছে ভয় পেয়েই শাশ্বত এই কথা বলছেন। আসলে উনি বাংলায় বাস করেন। বাংলায় কাজ করেন। তাই ওনার উপর একটা রাজনৈতিক চাপ থাকতেই পারে। তবে তিনি মনে করেন, সত্যের জন্য লড়াই করা উচিত। শাশ্বাতকে যে শুধু তাঁর চরিত্রের কথা বলা হয়েছিল তা নয়। কারণ একটি গল্পের পুরো বিষয়বস্তু একজন অভিনেতাকে জানতে হয়। শাশ্বতর উচিত ছিল এই ছবি সকলকে দেখার জন্য আহ্বান জানানো। আরও একটু বেশি সাহসী হওয়া।
পল্লবীর দাবি, এই ছবির নাম সম্পর্কেও শাশ্বতর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তবে ছবির নাম বদল হয়েছে এ কথা মেনে নিয়েছেন পল্লবী। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রথমে এই ছবির নাম ছিল ‘দ্য দিল্লি ফাইলস: বেঙ্গল চ্যাপ্টার’। কিন্তু পরে বাংলার জন্য এই ছবির নামকরণ করা হয় ‘বেঙ্গল ফাইলস।’
এই ছবি কি সত্যিই প্রোপাগান্ডা?
এই প্রশ্নের উত্তরে পল্লবী বলেন, তিনি কোথাও এমন কিছু শোনেননি। তবে যখন কোনও শিশু তার কাঙ্খিত খেলনা না পায় তখন সে কান্নাকাটি করে। তাই কোনও কোনও সময় আপনাকে ওই শিশুকে উপেক্ষা করতে হবে। তিনিও ঠিক সেভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে পল্লবীর এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ দায়ের করেছেন গোপাল মুখোপাধ্যায়ের নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়। শান্তনুর অভিযোগ, ইতিহাস বিকৃত করে বাংলা, বাঙালি বিশেষত গোপাল পাঁঠা বা ওরফে গোপাল মুখোপাধ্যায়কে অসম্মান করেছেন বিবেক। বিবেকের এই ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চাও। অনেকেই মনে করছেন, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ছবির মাধ্যমে একটি বিশেষ দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিবেক।