বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের নিয়ে কৌতুক করার ঘটনায় কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, “যখন আপনি বক্তব্যকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছেন, তখন কোনও সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করা চলবে না।”
এই মন্তব্য করেন বিচারপতি সুর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ। মামলাটি দায়ের করেছিল কিওর এসএমএ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া, যা স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারের জন্য কাজ করে। আবেদনে বলা হয়েছিল, কৌতুকশিল্পীরা বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের নিয়ে উপহাসমূলক রসিকতা করছেন।
এই মামলায় কৌতুকশিল্পী সময় রায়না, বিপুন গোয়েল, বলরাজ পরমজিৎ সিং ঘাই, সোনালি ঠাক্কার ও নিশান্ত জগদীশ তানওয়ার-এর নাম উঠে আসে।
বেঞ্চ স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেছে, “আজ বিশেষভাবে সক্ষমদের নিয়ে কৌতুক হচ্ছে, কাল হতে পারে নারী, প্রবীণ নাগরিক কিংবা শিশুদের নিয়ে। এভাবে চলতে থাকলে কোথায় গিয়ে শেষ হবে?”
অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারামণি জানান, কেন্দ্র নির্দেশিকা তৈরি করবে কৌতুকশিল্পী ও ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য। তবে তিনি এও বলেন, “সম্পূর্ণভাবে মুখ বন্ধ করে দেওয়া যাবে না।” এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সূর্য কান্ত মন্তব্য করেন, “নির্দেশিকা কোনও একটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে হওয়া উচিত নয়, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতামতও প্রয়োজন।”
আদালত কৌতুকশিল্পীদের সতর্ক করে জানিয়েছে, ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়, ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের অভিযোগে প্রত্যেকবার ফাউন্ডেশনকে আদালতে ছুটতে না হয়।
আইনজীবী অপরাজিতা সিং প্রস্তাব দেন, জরিমানা ধার্য করার বদলে কৌতুকশিল্পীরা যেন বিশেষভাবে সক্ষম ও বিরল রোগে আক্রান্তদের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অবদান রাখেন। এতে তাদের প্রভাব ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানো যাবে। কৌতুকশিল্পীরা এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন।
আদালতের নির্দেশ, কৌতুকশিল্পীরা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন এবং কী ধরনের দণ্ড বহন করবেন তা জানাবেন।