আরজিকর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দুই চিকিৎসক মানস গুমটা ও সুবর্ণ গোস্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হল বউবাজার থানায়। ইতিমধ্যেই দুই চিকিৎসকের বাড়ির ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, সুবর্ণ গোস্বামীকে ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টায় বউবাজার থানায় যেতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে মানস গুমটাকে পরের দিন অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর ওই একই সময়ে অর্থাৎ দুপুর ১২ টায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। আরজিকর আন্দোলনের অন্যতম মুখ এই দুই চিকিৎসক।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আরজিকর আন্দোলন নিয়ে এমনিতেই কিছুটা ব্যাকফুটে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। এরই মধ্যে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন ক্রমশ এগিয়ে আসছে। এই সময় চিকিৎসকরা আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে গেলে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়বে। সে কারণেই এবার সরকারের তরফে শুরু হল চিকিৎসকদের পাল্টা চাপে রাখার কৌশল। সে কারণেই কি দুই চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হল থানায়?
তবে পুলিসের নোটিশ নিয়ে ওই দুই চিকিৎসক মুখ খোলেননি। সময় মেনে তাঁরা আদৌ থানায় যাবেন কিনা বা পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেন তা নিয়েও কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে অর্থাৎ ২০২৪ -এর অগস্টেও সুবর্ণ গোস্বামীকে তলব করেছিল লালবাজার। সেই সময় একইসঙ্গে তলব করা হয়েছিল চিকিৎসক কুণাল সরকারকেও। ২ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আরজিকর নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছিল পুলিশ। সে কারণেই তাঁদের তলব করা হয়েছিল।
এরই মধ্যে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিস চার্জশিট দাখিল করল। পুলিসের পেশ করা চার্জশিট নাম রয়েছে ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক তথা সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ ৫৪ জনের। আরজিকর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে জুনিয়র চিকিৎসক অরিন্দম ঘোষকে সোমবার তলব করা হয়েছিল হেয়ার স্ট্রিট থানায়। ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর একটি মিছিল আয়োজন করার কারণে ওই চিকিৎসককে তলব করা হয়। ওই মিছিল সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য অরিন্দমকে ডাকা হয়। প্রতিবাদে সোমবার হেয়ার স্ট্রিট থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান চিকিৎসকরা। ওই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল অভয়া মঞ্চ, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের মত একাধিক সংগঠন।
এর আগে লন্ডনের চিকিৎসক রজতশুভ্র বন্দোপাধ্যায় আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মুখ খোলায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল সরকার।
তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে চিকিৎসক বা রাজনৈতিক দলগুলিকে আরজিকর নিয়ে কোনও আন্দোলনের সুযোগ দিতে রাজি নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। চিকিৎসকরা যাতে নতুন করে কোনও আন্দোলন করতে না পারেন তার জন্যই কি তাঁদের চাপে রাখতেই সুবর্ণ গোস্বামী বা মানস গুমটার মত চিকিৎসকদের তলব করা হচ্ছে? ইতিমধ্যেই আরজি কর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক চিকিৎসককে বদলিও করেছে সরকার।