মানুষ গড়ার কারিগরদের সম্মান জানানো। শিক্ষক দিবসে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হবেন এই রাজ্যের দুই শিক্ষক। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দেশের বাছাই করা ৪৫ জন শিক্ষককে সম্মানিত করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। বাংলা থেকে যে দুই শিক্ষক জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হবেন তাঁরা হলেন, খড়্গপুর হিজলির কুচলাছটি প্রাইমারি স্কুলের তনুশ্রী দাস এবং দিল্লি পাবলিক স্কুল নিউটাউনের মধুরিমা আচার্য। প্রতি পুরস্কারপ্রাপক পাবেন একটি সার্টিফিকেট, একটি রৌপ্য পদক এবং নগদ ৫০,০০০ টাকা।
জাতীয় পুরস্কার প্রাপকদের থাকার জন্য নয়াদিল্লির অশোকা হোটেল ইতিমধ্যেই বুক করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে ৩ থেকে ৬ সেপ্টম্বর থাকতে পারবেন নির্বাচিত ৪৫ শিক্ষক-শিক্ষিকা। স্থির হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভাও হবে হোটেলে।
রাজ্যের শিক্ষারত্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত তনুশ্রী দাস, সেই ১৯৯৯ সালে খড়গপুরের হিজলির কুচলাচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন এবং মধুরিমা আচার্য, গত ১৯ বছর ধরে ডিপিএস নিউ টাউনের স্কুলে কম্পিউটার সায়েন্সের টিচার।
.
খড়গপুরের হিজলির কুচলাচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত। তনুশ্রী দাস সেই ২০১৬ সালে থেকে প্রধান শিক্ষিকার ভূমিকায় এখানে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি সমগ্র শিক্ষা মিশনের কর্তৃক জেলাব্যাপী ‘Teaching Learning Materials প্রতিযোগিতা এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রথম স্থান অর্জন করেছে। জেলার প্রায় ৩৫০০ স্কুল প্রতিযোগিতায় সামিল হয়েছিল।
শিক্ষক দিবস ঘিরে জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় তাঁর নাম থাকায় কৃতজ্ঞ ও আপ্লুত তনুশ্রী দাস। প্রত্যন্ত এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের নজর কেড়ে নেওয়ার নেপথ্য কাহিনি তুলে ধরেছেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর স্কুলে বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীর পরিবার রীতিমতো আর্থিক সংকটে থাকে। তাই শিক্ষার্থীদের উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করার মতো টাকা পয়সা রাখতে পারেন না। সমস্যা মেটাতে প্রাথমিক স্কুলেই তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেছেন। প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থী সেখানে প্রতিদিন অল্প পরিমানে হলেও কিছু টাকা জমা করে। এই সব যাবতীয় কর্মকাণ্ড সামাল দেয় খুদে শিক্ষার্থীরাই। জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিলে জমা টাকা তোলারও সুযোগ রয়েছে স্কুলের এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায়।
নিউটাউন ডিপিএস -এর মধুরিমা আচার্য গত ২২ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন এই স্কুলে। প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে বাস্তব জীবনেও প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে সেই চেষ্টাই তিনি করে আসছেন। কম্পিউটার সায়েন্সের খুঁটিনাটি হাতে কলমে শেখাতে উৎসাহিত করে চলেছেন নিরন্তর।
জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হওয়ার সুয়োগ পেয়ে স্কুল এবং CISCE-এর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মধুরিমা।