ভারত ও আমেরিকার চলতি শুল্কযুদ্ধের মধ্যে নয়াদিল্লি সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মেগা প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে বলে খবর। চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিক থেকে ৯৭টি তেজস এলসিএ জেট ইঞ্জিন এবং ১১৩টি অতিরিক্ত এফ-৪০৪ বিমানের ইঞ্জিন কিনবে ভারত। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড বা হ্যাল দেশেই মার্কিন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ওই দুই বিমান তৈরি করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বায়ুসেনার শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা। দিন কয়েক আগে, মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন শক্তি বৃদ্ধির জন্য হ্যালের কাছ থেকে ৯৭টি অতিরিক্ত তেজস তেজস এলসিএ এমকে -১এ কেনার অনুমোদন দিয়েছে। যার জন্য খরচ হবে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা। নতুন চুক্তি অনুযায়ী হ্যালকে নির্দিষ্ট সময়মতো ১৮০টি তেজস এলসিএ এমকে -১এ সরবরাহ করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হ্যাল যাতে বিমানগুলি সরবরাহ করতে পারে তার জন্যই আমেরিকার কাছ থেকে বিমানের ইঞ্জিন কেনার চুক্তি হতে চলেছে।
জানা গিয়ছে, জেনারেল ইলেকট্রিক এফ-৪০৪ সরবরাহে দীর্ঘ বিলম্বের কারণেই বেঙ্গালুরু-ভিত্তিক বিমান সংস্থা হ্যাল এখনও বিমান বাহিনীকে দেশীয়ভাবে তৈরি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে পারেনি।
হ্যালের লক্ষ্য হল ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে প্রথম দফায় ৮৩টি বিমান এবং দ্বিতীয় দফায় ২০৩৩-৩৪ সালের মধ্যে ৯৭টি বিমান সরবরাহ করা। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই বিমানগুলি সরবরাহ করতে হলে জেনারেল ইলেকট্রিককে প্রতি মাসে কমপক্ষে দুটি ইঞ্জিন সরবরাহ করতে হবে।
জানা গিয়েছে, তেজস এলসিএ-র অত্যাধুনিক সংস্করণ এবং পঞ্চম প্রজন্মের উন্নতমানের মাঝারি যুদ্ধ বিমানের জন্য ২০০টি আরও শক্তিশালী জিই-৪১৪ ইঞ্জিন কেনার জন্য হ্যাল মার্কিন সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিকের সঙ্গে আলোচনা করছে।
সূত্রের খবর, হ্যাল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
সূত্র অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্রযুক্তি এনে দেশেই যদি অত্যাধুনিক মানের উন্নত বিমান তৈরি করা যায় সেক্ষেত্রে দেশে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে তেমনই দেশে প্রদেশীয় প্রযুক্তিতে অত্যাধুনিক বিমান তৈরীর সংখ্যা বাড়বে। যা প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই চুক্তি চূড়ান্ত হলে প্রতিরক্ষা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিও উৎসাহিত হবে।