জম্মু ও কাশ্মীর জুড়ে একটানা ভারি বর্ষণে মঙ্গলবার আবারও ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন বৈষ্ণোদেবী যাত্রাপথে ভূমিধসে চাপা পড়া তীর্থযাত্রী।
প্রবল বর্ষণের কারণে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের পথে বিকেল তিনটার দিকে ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ের কাছে পাহাড় ধসে যায়। ঘটনাস্থলেই ৯ জন মারা যান এবং কমপক্ষে ২১ জন আহত হয়েছেন। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতির কারণে বৈষ্ণোদেবী যাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। জম্মু-শ্রীনগর ও কিশ্তোয়ার-ডোডা জাতীয় সড়কসহ বহু পাহাড়ি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ট্রেন চলাচলও আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে সেতু ভেঙে পড়েছে, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে আছেন। সেনাবাহিনীর তিনটি কলাম উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় নেমেছে।
গত ১৪ই আগস্ট কিশ্তোয়ার জেলার চসোটি গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও বন্যায় ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবারের এই বিপর্যয়ে ডোডা, রিয়াসি, রাজৌরি, রামবন ও পুঞ্চসহ একাধিক জেলায় প্রাণহানি এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পরিস্থিতি গুরুতর বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তিনি প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য, পানীয় জল ও ওষুধ দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছেন।
তারনা, উঝ, তাওয়াই ও চেনাব সহ উপত্যকার সবকটি নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি চলবে। সেই সঙ্গে হঠাৎ বন্যা, মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।