নিক্কি ভাটি হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়! গ্রেটার নয়ডায় পণের দাবিতে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ সামনে এসেছিল। এবার সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা নিক্কির শেষকৃত্যের একটি ভিডিয়ো সামনে আসতেই তাঁর বোনের অভিযোগের সঙ্গে বড় ধরনের অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট রাতে। ২৮ বছরের নিক্কির বোন কাঞ্চন, যিনি একই পরিবারের সদস্য রোহিতের স্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন যে, নিক্কিকে তাঁর স্বামী বিপিন ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পুড়িয়ে মেরে ফেলে। কাঞ্চনের দাবি অনুযায়ী, বোনকে আগুনে জ্বলতে দেখে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং পরিবারের লোকজন সবাই পালিয়ে যায়। নিক্কির বাবা ভিকারি সিং পৈলা অভিযোগ করেন, শ্বশুর ছাড়া বাকি সবাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তবে ভিডিয়ো বলছে অন্য কথা।
কিন্তু শুক্রবার সকালে নিক্কির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ভিডিয়োতে দেখা যায়, তাঁর শ্বশুরসহ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এমনকি তাঁর শ্বশুরই চিতায় আগুন দেন। এই শেষকৃত্যের কয়েক ঘণ্টা পর, দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে নিক্কির পরিবার অভিযোগ দায়ের করে। সেখানে স্বামী বিপিন, দিদির স্বামী রোহিত, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে নিক্কিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
পরে বিপিন, রোহিত ও তাঁদের বাবা-মাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় বিপিন পুলিশের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর পায়ে গুলি লাগে।
এর আগেও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় বিপিন ও আরেক মহিলা নিক্কিকে চুল ধরে টানছেন। বিপিনের গায়ে জামা ছিল না এবং তাঁর শরীরে রক্তের দাগ ছিল। অন্য একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, আগুনে পোড়া নিক্কি সিঁড়ি বেয়ে নামছেন এবং পরে মেঝেতে বসে পড়ছেন। তাঁর সারা শরীরে গুরুতর পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল।
কাঞ্চনের অভিযোগ, “আমাদের ওপর ক্রমাগত পণ নিয়ে নির্যাতন চলছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলত, বিয়েতে এটা-ওটা পাওয়া যায়নি। তারা ৩৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত পণ দাবি করেছিল। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত আমাকেও মারধর করা হয়। তারা বলেছিল,’এক বোনের থেকে তো পণ পেয়েছি, অন্যজনের কী হবে? তোমার বেঁচে থাকার দরকার নেই, আবার বিয়ে দেব।’ আমি মার খেয়ে প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “সেদিন সন্ধ্যায় আমার সামনেই বোনকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। তারপর তাঁর গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমি বাঁচানোর চেষ্টা করলেও পারিনি। কেউ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, কিন্তু আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।” এই ঘটনার পর গ্রেটার নয়ডার সিসার গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তদন্তে পুলিশ।