বৃহস্পতিবার ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষে মেয়ো রোডে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এদিকে এদিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ এলএল বি এবং বিকম চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। এই দিন পরীক্ষা কীভাবে হবে তা নিয়ে নানা মহলে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে নির্বিঘ্নে। এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে।
তিনি জানিয়েছেন, ‘সম্ভবত ১৪ টা ১৫ টা বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা নিয়ে স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়। কন্ট্রোলার যা সরকারি ছুটি দেখে করেছেন, কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি দেখে নয়। ২৮ আগস্টের পরীক্ষা নিয়ে হঠাৎ একদিন জনা ২৫ ছাত্র ঝামেলা করেন, যাতে ওইদিন পরীক্ষা না হয়। তারা ছাত্র নাকি সেটাও সন্দেহ ছিল। এরপরেই উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে পার্সোনাল ফোন আসতে থাকে। বলা হয় পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কথা। আমরা বলি পারব না। তারপর বলেন ওনারা, সিএম করতে বলেছেন। আমরা ওনাদের বলি, সিএম-কে বুঝিয়ে বলতে। তার পরের ১-২ দিনের মধ্যে উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে চিঠি আসে। আমরা সিন্ডিকেটের বৈঠক করি। যেখানে ব্রাত্য বসুর প্রতিনিধি ছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। আমাদের সিন্ডিকেটের ২৫ জন সদস্যই ছিলেন। ওইদিন এটা নিয়ে অনেক তর্কাতর্কি হয়। আর সেখানে উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা এবং ওমপ্রকাশ মিশ্র বারবার বলেন সিএম-এর অনুরোধ রাখতে। তারপরেই ভোট হয় এবং পরীক্ষার পক্ষে ভোট দেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
‘এখানেই শেষ নয়। কটূক্তি, গালিগালাজ চলতে থাকে। একজন প্রাক্তন ছাত্র কলেজের বাইরে আমাকে গালিগালাজ করে। আমাদের আজ পরীক্ষা ঠিকঠাক হবে কিনা তা নিয়ে সবার চিন্তা ছিল। আমার চিন্তা ছিল না কারণ আমি জানি যারা ছাত্র যারা পরীক্ষা দিতে চায় তারা আজ সকাল সকাল চলে আসেন। ৯৩% হারে পরীক্ষা হয়েছে। রাস্তাতেও কোনও সমস্যা হয়নি। তাই যে ভয় দেখানো হয়েছিল সেগুলো যে মিথ্যে তা বোঝা গেল। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কথা মেনেছেন বলে ওনারা ভাবেন সবাই তাই করবেন। যেটা অনেক উপচার্যের করার কথা ছিল আমরা সেটাই করেছি।’
এদিকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বিষয়ের পরীক্ষা এদিন বাতিল করা হয়েছিল।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস বলেন, আমি উচ্চশিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়। তারা বলেন পুলিশকে জানাতে। আমরা সেই মতো পুলিশকে জানাই। ওনারা খুব ভালো কাজ করেছেন।
কন্ট্রোলার জয়ন্ত সিনহা জানিয়েছেন, আজ দুই ধাপে পরীক্ষা হয়েছে। প্রথম ধাপে ৯৬% উপস্থিতি ছিল, দ্বিতীয় ধাপে ৯৫%।
এদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ আগেই জানিয়েছিলেন, ‘রাজ্যের বৃহত্তম ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, সেটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করবে না, এটা কোনও কথা হল!’
তবে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা হল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষা হয়েছে নির্বিঘ্নেই।