ফের সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবিধান সংশোধনী বিল (SIR) বিতর্কের আবহে একযোগে তোপ দাগলেন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রের মোদি সরকারকে। বৃহস্পতিবারের দুপুরে, মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে দলের ছাত্র-যুব সদস্য-সমর্থকদের বার্তাও দিয়েছেন দলনেত্রী। সতর্ক করে বলেছেন, “আমি সবাইকে বলছি ভোটার লিস্ট দেখে নেবেন। আধার কার্ডটাও কাছে রাখবেন, কারণ ওরা খুঁটিনাটি সব তথ্য নিয়ে গিয়ে নাম কেটে দিতে পারে। সার্ভে করতে এলে বিস্তারিত তথ্য দেবেন না”।
এসআইআর ঘিরে কমিশনের পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছেন মমতা। সভামঞ্চে তিনি বলেন, “বিডিও, এসডিও, ডিএম, পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছে, বলছে চাকরি খেয়ে নেব, নয় জেলে পুরে দেব। আমি বলি, ইলেকশন কমিশন আসে আর যায়, তারপরে কিন্তু রাজ্য সরকার থাকে। মনে রাখবেন, ওদের আয়ু ইলেকশন চলাকালীন তিন মাস। গায়ের জোরে এ সব হবে না।”
সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকারের উদ্দেশেও তোপ দেগেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “যতই চক্রান্ত করো, কোনও লাভ হবে না। সারা ভারত থেকে ৫০০ টা টিম নিয়ে এসেছে। কার নাম বাদ দেওয়া যায়, সেই চক্রান্ত চলছে।” বলেন, “মোদিজি সারাক্ষণ ‘দুর্নীতি’ দুর্নীতি বলে চিৎকার করেন। অথচ সারা দেশে যেখানে যেখানে বিজেপি ক্ষমতায় আছে, সেখানে দুর্নীতি-সন্ত্রাস-গুজরাত মডেলই আসল চিত্র। আমরা বাংলায় মানুষকে প্রকৃত সামাজিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করি, আর ওরা মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়।”
কেন্দ্রের এনডিএ সরকারকে ললিপপ সরকার বলেও কটাক্ষ করেছেন মমতা। ছাত্র-সমাবেশের মঞ্চে বলেন, “আমাদের কাছেও ভাণ্ডারা আছে। আমাদের কাছে যেমন লক্ষীর ভাণ্ডার আছে, তেমনই দুর্নীতির ভাণ্ডারের ফাইলও আছে। দরকার হলে সব ফাঁস করে দেব।”
মেয়ো রোডের এদিনের সমাবেশ মঞ্চে অমিত শাহকেও নিশানা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “আপনি পরিবারতন্ত্রের কথা বলেন, অথচ আপনার ছেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগ নেই, তবুও রাজনীতির সর্বত্র আপনার পরিবারের ছড়াছড়ি। ললিপপ দিয়ে মানুষকে ভুলিয়ে রাখছেন। আমাদের সরকার কিন্তু অধিকার দেয়, ললিপপ নয়।”
ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের ছাত্র-যুবাদের স্মরণ করিয়েছেন তৃণমূলের চালিকাশক্তিকে। বলেন, “তৃণমূল মানুষের আশীর্বাদে তৈরি। আমরা কখনও লড়াই ছেড়ে দিইনি, দিতেও পারব না। বাংলার মানুষ জানে, বাংলা যা পারে, অন্যরা পারে না। তাই আগামী নির্বাচনে আসন আরও বাড়বে।”