তিন বছর ধরে চলা মামলার অবসান ঘটিয়ে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত এক যুবককে বেকসুর খালাস দিল সুরাট সেশনস কোর্ট। আদালত রায়ে স্পষ্ট জানায়, সম্মতিসূচক সহবাসের পর বিয়ে করতে অস্বীকার করা ধর্ষণের শামিল নয়।
২০২২ সালের জুলাই মাসে ডিনডোলির এক বিবিএ পড়ুয়া তরুণী কাটারগামের এক এম টেক ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ইনস্টাগ্রামে বন্ধুত্বের পর যুবক তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় এবং বারবার সম্পর্ক বজায় রাখে। কিন্তু পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। পুলিশ গ্রেফতার করে চার্জশিট দাখিল করে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেন, সম্পর্কটি ছিল পারস্পরিক সম্মতিসূচক, কোনও জোরজবরদস্তি ছিল না। এটি মূলত ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের ফলাফল। তিনি আগের হাইকোর্টের কয়েকটি রায়ের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে হওয়া যৌন সম্পর্ক সবসময় ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা যায় না।
আদালতেরও পর্যবেক্ষণ, অভিযোগকারী শিক্ষিতা এবং নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষম। জাতিভেদের কারণে বিয়ে হয়নি বলে অভিযুক্তের পরিবার যে কারণ দেখিয়েছে, তা সত্ত্বেও তরুণী স্বেচ্ছায় সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
আইনজীবী তদন্তে বেশ কিছু প্রমাণে অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন।
প্রথমত, তরুণী নিজের পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেল ও রেস্তোরাঁয় থাকতেন, যা থেকে জোরজবরদস্তির অভিযোগ দুর্বল হয়।
দ্বিতীয়ত, গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ করা হলেও ডিএনএ রিপোর্টে এর জন্য অভিযুক্তই দায়ী তেমন প্রমাণ মেলেনি।
পাশাপাশি চিকিৎসকের সাক্ষ্যে উঠে আসে, তরুণী নিজেই জানিয়েছেন যে ৩০-৩৫ বার স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। চিকিৎসক আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন আকাঙ্ক্ষা পুরুষদের তুলনায় প্রবল হতে পারে, যা একটি মানসিক অবস্থা। এই যুক্তিকেও আসামিপক্ষ ব্যবহার করে অভিযোগকে দুর্বল করে।
সব দিক খতিয়ে দেখে আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছয়, এটি ধর্ষণের মামলা নয়। অভিযুক্তকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।
