মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০% শুল্ক আরোপের ধাক্কা। বাংলায় কমবেশি ১৭ হাজার কোটি টাকার পণ্য সামগ্রীর রফতানি এখন ঝুঁকির মুখে। কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে তা এখনও ভেবে উঠতে পারছে না উৎপাদন ও রফতানিতে যুক্ত সংস্থাগুলি। ৫০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্কের প্রভাব বেশি করে পড়েছে চিংড়ি, চামড়া, পোশাক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী রফতানি ঘিরে।
শুধুমাত্র বাংলা থেকেই মার্কিন মুলুকে রফতানিকৃত ৪টি পণ্যসামগ্রীকে ঘিরে জড়িত ৭ লক্ষেরও বেশি কর্মী। কর্মী সংখ্যার নিরিখে শীর্ষ স্থানে চামড়া। অন্যদিকে, অর্থমূল্যের দিক থেকে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সামুদ্রিক পণ্য তথা চিংড়ি। এই দুটি পণ্য মার্কিন মুলুকে বার্ষিক রফতানি হয় যথাক্রমে ৯,০০০ কোটি এবং ৬,০০০ কোটি টাকার মতো।
Engineering Export Promotion Council India তথা EEPC-র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলার বার্ষিক ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী রফতানি হয় কমবেশি ৩০ হাজার কোটি টাকার। যেটির প্রায় ৩০ শতাংশই আসে মার্কিন মুলুক থেকে। শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবে অর্ডার যেমন বন্ধ হয়ে যেতে পারে, তেমনি কারখানা বন্ধেরও আশঙ্কা। ইঞ্জিনিয়ারিং রফতানি শিল্পে জড়িত কমবেশি ১ লক্ষ কর্মী।
ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পরই রয়েছে সামুদ্রিক পণ্য বিশেষ করে চিংড়ি বাণিজ্য। রাজ্যের শিল্প মহলের অনুমান, বাংলায় প্রতি বছর প্রায় ৭০ হাজার টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়। তার ৮৫ শতাংশই হয় রফতানি। রাজ্য থেকে হিমায়িত চিংড়ি রফতানি করে আয় হয় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই টাকার ৮০ শতাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে।
বস্তুতপক্ষে মার্কিন মুলুকে চামড়ার সামগ্রী, তৈরি পোশাক, চিংড়ি সহ রত্ন ও গহনার প্রধান রফতানিকারক দেশ হল ভারত। গত বুধবার থেকে ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্কের জোর প্রভাব পড়েছে দেশের রফতানি বাণিজ্যে। তবে রফতানিকারকেরাও বসে নেই। দুঃশ্চিন্তা ঘাড়ে নিয়েই মার্কিন মুলুক ছেড়ে বিকল্প আন্তর্জাতিক বাজার খুঁজছেন। সেই বাজারে খরচ কিছুটা বেশি হলেও শুল্কযুদ্ধে মাথা নিচু করতে তাঁরাও রাজি নন।