বিহারে রাহুল গান্ধীর ভোটের অধিকার যাত্রা নিয়ে রাজনীতির পারদ চড়ছে চড়চড় করে। কে বা কারা মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর প্রয়াত মায়ের নামে কটূক্তি করল, তা নিয়েই সরগরম রাজনীতি। অভিযুক্ত গ্রেফতার। তবে রাহুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এই দাবিতে অনড় বিজেপি। আর তার আঁচ লাগল বিভিন্ন রাজ্যে। পাটনা থেকে কলকাতা, দুদলের সংঘর্ষ বাধল। কলকাতায় কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলার অভিযোগ। নেতৃত্বে রাকেশ সিং। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে খোলা চিঠি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের। পাল্টা শুভঙ্করকে চিঠি বিজেপির আইনজীবী-নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারির। বাগযুদ্ধের পারাও চড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন অধীর চৌধুরী। বললেন, কোনও মস্তানি মানব না। দরকারের পাল্টা ঘেরাও। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য, রাহুল গান্ধীর কথার কোনও পাল্টা উত্তর নেই বিজেপির কাছে। তাই এইভাবে তাঁকে এবং কংগ্রেসকে বদনাম করতে চাইছে তারা।
শুক্রবার সকালে একদল বিজেপি সমর্থক বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে শিয়ালদহে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে গিয়ে ভাঙচুর চালান। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ছবি সহ একাধিক ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ। তীব্র নিন্দা প্রদেশ কংগ্রেসের। অধীর বলেন, কংগ্রেস এর মোকাবিলা করবে। কোনও পার্টির মস্তানি মানব না।
তিনি আরও বলেন, রাহুল গান্ধী কী বলছেন তা জানার চেষ্টা না তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হচ্ছে। বিহার ভোটের আগে উস্কানি দিয়ে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। এ নিয়ে দলীয় কর্মীদের বার্তাও দিয়েছেন অধীর। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে, কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এই মন্তব্য করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর সাফ কথা, প্রদেশ কংগ্রেস সদর দফতর দলের পরিচয়। সেখানে আক্রমণ হলে সবাইকে একজোট হয়ে তা রুখতে হবে। দরকার পড়লে পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। বিজেপির যারা এই কাজ করেছে তারা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কলকাতায় আন্দোলন চালিয়ে রাখার পরামর্শও দিয়েছেন অধীর।
যেটা তাঁদের রাজনীতির ঠিকানা, অস্তিত্বের ঠিকানা, সেখানে কোনও রকম জুলুম হবে, তাণ্ডব হবে তা মানব না। প্রয়োজনে পাল্টা বিজেপি দফতর ঘেরাও করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, রাহুল গান্ধীর মুখোমুখি নরেন্দ্র মোদি দাঁড়াতে পারছেন না, তাই লোকজন দিয়ে এই ধরনের কাজ করানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসা একটি ভিডিয়ো ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। অভিযোগ, ‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’ চলাকালীন দরভাঙ্গায় কংগ্রেসের পতাকা গায়ে জড়ানো এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে অশ্লীল মন্তব্য করেন। ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই বিজেপি থানায় এফআইআর দায়ের করে এবং কংগ্রেসের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও অশান্তি থামছে না।