পি ভি নরসিমা রাও থেকে অটল বিহারী বাজপেয়ী। আবার রাজীব গান্ধী থেকে মনমোহন সিংও। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের সান্নিধ্য এবং সংস্পর্শে থাকার স্মৃতিকথাই এবার বই আকারে প্রকাশ করবেন মমতা বন্দ্যোপধ্যায়। ৭ বারের সাংসদ আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন অভিজ্ঞতাই তুলে ধরতে চান তিনি। আগামী বছরের কলকাতা বইমেলায় সেই বইটি প্রকাশিত হবে বলেও আগাম জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বই প্রকাশের কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেছেন, ”সাত বার সংসদ হয়েছি, দু-বার রেলমন্ত্রী, কয়লামন্ত্রী, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী ছিলাম। আমি অনেক প্রধানমন্ত্রী দেখেছি। এবার একটা বইও লিখব। ‘কে কেমন ছিলেন’। যাঁকে যেমন দেখেছি, তা নিয়ে লিখব। পরবর্তী বইমেলায় বইটা বেরোবে।”
প্রসঙ্গত, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় প্রতি বছরই নিজের লেখা বইও প্রকাশ করেন। সেই পরম্পরা বজায় রেখেই আগামী বইমেলার জন্য নিজের বইয়ের বিষয় এবং শিরোনামও চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। তৃণমূল সূত্রে দাবি, এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫৩ টি বই লিখেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা চার দশকেরও বেশি। ভারতীয় রাজনীতিতে বর্তমানে সক্রিয় নেতাদের মধ্যে তাঁরই রয়েছে রাজীব গান্ধী থেকে মনমোহন সিং পর্যন্ত বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা। কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করলেও, অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ শাসনকালেও তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন।
১৯৯৮-২০০৬ সময়কালে তিনি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র অংশ ছিলেন এবং তারপরে ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-২ সরকারের অংশ ছিলেন মমতা। স্বভাবতই তাঁর লেখা বইটিতে সে সময়ের সর্বোচ্চ স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অপ্রকাশিত পর্যবেক্ষণ উঠে আসবে বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের মধ্যে প্রধান কণ্ঠস্বর। নানান ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই কিংবা জেহাদ ঘোষণা প্রায়শই সর্বভারতীয় সংবাদ মধ্যমে অনেকটা জায়গা কেড়ে নেয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতার নতুন বইটি কৌশলগত বার্তা হিসেবেও কাজ করবে।