ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জনস্বার্থ মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, মামলাটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টে শোনা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রকে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, বাংলায় কথা বললেই কেন বাংলাদেশি বলে আটক করা হচ্ছে?
সেই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লেখেন, “মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট আজ একটি জনস্বার্থ মামলার সূত্রে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে যুগান্তকারী নির্দেশ ও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সীমান্ত রাজ্য হিসেবে বাংলার ঐতিহাসিক ভূমিকা স্বীকার করে প্রজন্মের পর প্রজন্মে বাংলা কীভাবে আশ্রয়, ভরসা ও সংস্কৃতির আশ্রয়স্থল হয়েছে, তার স্বীকৃতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আজকে মিলেছে।”
তিনি আরও লেখেন, “মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের মাননীয় হাই কোর্টকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদনটিকে শুনতে নির্দেশ দিয়েছেন। আটক হওয়া বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটা বড় ভরসার জায়গা আজ তৈরি হল।”
মমতার বক্তব্য অনুযায়ী, এই রায় বাংলাভাষী অসংখ্য শ্রমিককে নতুন আশার আলো দেখাবে। তাঁর কথায়, “বাংলার অনন্য অবস্থান নিয়ে এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি বাংলাভাষী অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিককে আশা জোগাবে। আমাদের দেশে নানা প্রান্তে শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করতে থাকা পরিবারগুলি এবার একটু আশার আলো দেখছেন। আমি আমার পরিযায়ী শ্রমিক ভাইবোনদের পাশে দৃঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।”
বিচারব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা রেখেই তিনি আরও যোগ করেন, “বিচারবিভাগের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তাঁদের কাছে বাংলার প্রতিজন শ্রমিক সম্মান, মর্যাদা ও সাংবিধানিক ন্যায় বিচার পাবেন, এই প্রত্যয় আমাদের আছে।”
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ওয়েলফেয়ার বোর্ডের করা একটি মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই শুনানিতেই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, কেন নথি-পরিচয় এবং নাগরিকত্ব যাচাই না করে কাউকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? কেন বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে কাউকে? এই সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট শুনানিতে রাজি হচ্ছে না বলেও শীর্ষ আদালতে অভিযোগ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টকে দ্রুত শুনানির নির্দেশ দিয়েছে।