মেট্রো তো নয়, যেন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। যেন বাদুড়ঝোলা ভিড়। থিক থিক করছে লোক, সিঁড়িতে, এসক্যালেটরে। মেট্রোর হয়রানির শেষ কবে? কীভাবে করা যাবে মোকাবিলা? উত্তর খুঁজছেন মেট্রো কর্তারা। তিন লাইন জুড়ে যেতে যে এই সমস্যায় পড়তে হবে, আগাম আন্দাজ করতে পারেননি তাঁরা। ফলে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম রুটে ৯টি রেকের একাধিক দরজায় যান্ত্রিক সমস্যা। মাঝে মধ্যেই মেট্রোর দরজা বন্ধ হতে সমস্যা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শোভাবাজার স্টেশনে ভিড়ের চাপে মেট্রোর দরজা বন্ধ হয়নি। এর জেরে প্রায় আধ ঘণ্টা মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল।
মেট্রো মানে স্বস্তির যাতায়াত। এসিতে যানজটমুক্ত নির্বিঘ্ন সফর। সময় লাগে কম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তিন লাইন জুড়ে দিয়ে যেতেই মেট্রোতেই নাভিশ্বাস। মেট্রোর ভিতরে থিকথিকে ভিড়। মেট্রো স্টেশনেও লোকে লোক। এসক্যালেটরে ও সিঁড়িতে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এটাই এখন ব্লু লাইনে প্রতিদিনের চেনা ছবি। নিত্যযাত্রীদের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।
দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল গত তিরিশে জুলাই কবি সুভাষ মেট্রো বন্ধ হওয়ার পরে। শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলছে। সেখান থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে মেট্রো ঘোরাতে সময় লেগে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে মেট্রো চলাচলে। নতুন রুটে মেট্রো চালু হওয়ার পরে পুরনো রুটে দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেকেই বলছেন, পরিকল্পনার অভাব।
দক্ষিণেশ্বর থেকে নোয়াপাড়া হয়ে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত আগেই চালু ছিল মেট্রো। নোয়াপাড়া থেকে দমদম বিমানবন্দর পর্যন্ত নতুন রুটে পরিষেবা চালু হয়েছে৷ কিন্তু এর জন্য রেকের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। এর জেরে মেট্রোর রেকে ঘাটতি। ২০-২৫ মিনিট এখন মেট্রোয় লেট হচ্ছে। নোয়াপাড়া থেকে এয়ারপোর্টের মেট্রো এসে দাঁড়িয়ে থাকছে। নতুন রুট চালুর পরে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। সবাই বলছেন, নতুন রুট চালু হয়েছে, গাড়ি কেন বাড়েনি? এতেই শেষ নয়। দুর্ভোগের তালিকা আরও লম্বা। মেট্রো লেট হওয়ার সঙ্গেই রয়েছে যান্ত্রিক গোলযোগ।
একে ভিড়ে ভিড়। দোসর এসক্যালেটর খারাপ। মাটির নীচের স্টেশন থেকে উঠতে হচ্ছে হেঁটে। দমদম, শোভাবাজার সুতানুটি, গিরিশপার্ক, চাঁদনি, সেন্ট্রাল, কালীঘাট, এসপ্ল্যানেড স্টেশনের বেশকিছু এসক্যালেটর খারাপ। দমদম থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত পনেরোটি কুলিং সিস্টেম রয়েছে। যেগুলি খারাপ হতে শুরু করেছে। এর জেরে মাটির নীচে মেট্রো স্টেশনে দমবন্ধ পরিস্থিতি। যাত্রী দুর্ভোগ নিয়ে কলকাতা মেট্রোর বক্তব্য, অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে পুজোর শপিংয়ের কারণে ভিড় বাড়ে। একই সঙ্গে কয়েকটি রুটে যান্ত্রিক ত্রুটি তৈরি হয়েছে। সেগুলো মেরামতির কাজ চলছে। দ্রুত এই সমস্যা মিটে যাবে।