আধুনিক যুদ্ধ আর শুধুমাত্র যোদ্ধাদের উপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে তথ্য ও প্রযুক্তির উপর। কে কত ভালোভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতে পারছে তার উপর। অপারেশন সিঁদুরের সময় সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। সেখানে যোদ্ধাদের ভূমিকার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখা গিয়েছে। ভবিষ্যতের যুদ্ধে কে জিতবে তা নির্ধারণ করবে যোদ্ধা ও তথ্য-প্রযুক্তির মেলবন্ধন। শনিবার এনডিটিভির ডিফেন্স সামিট ২০২৫-এ এই কথা বললেন আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যারোস্পেসের সিইও আশিস রাজবংশী।
ওই অনুষ্ঠানে রাজবংশী বলেন, অপারেশন সিঁদুরে আমরা দেখেছি, আজকের দিনে আধুনিক বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে যুদ্ধ। নতুন এই পদ্ধতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে সম্পূর্ণ সচেতন থাকতে হবে।
নতুন এই যুদ্ধ পদ্ধতি কী?
যুদ্ধক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ। মানুষ এবং যন্ত্র বা প্রযুক্তি একসঙ্গে একই লক্ষ্যের দিকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করবে। যা অ্যাভেঞ্জার্স এজ অফ আলট্রন থেকে বেরিয়ে আসা একজন যোদ্ধার মতোই দুর্দান্ত।
রাজবংশী আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধক্ষেত্রেও বিপুল পরিবর্তন এনেছে তথ্য প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। প্রযুক্তির যুগে যোদ্ধার চেয়েও ড্রোন বড় হাতিয়ার। আগামী পাঁচ বছরে ভারতকে যুদ্ধক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে।
আগামী পাঁচ বছরে যদি আমরা সেই কাজ করতে না পারি তবে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এখন বিশ্বজুড়ে যুদ্ধক্ষেত্রেও প্রযুক্তিই প্রধান হয়ে উঠেছে।
রাজবংশী আরও বলেন, দ্রুত বদলে গিয়েছে বিশ্বের পরিস্থিতি। ন্যাটোর ভূমিকা ও গুরুত্ব আর আগের জায়গায় নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে আমাদের দ্রুত বদলাতে হবে। হাঁটতে হবে আধুনিকীকরণের পথে। এই কাজে আমাদের তথ্য ও প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে।
আধুনিক যুদ্ধের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যতের যুদ্ধের দ্রুত পট পরিবর্তন বোঝার জন্য যুদ্ধের ইতিহাসে জানা গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজবংশী জানান।
তিনি বলেন, ইতিহাসে বলছে, যুদ্ধ মানবজাতির মতোই প্রাচীন। আমাদের প্রযুক্তি এবং সমাজ গঠন এবং মানব বিবর্তনের ক্ষেত্রে যুদ্ধের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। দুটি বিশ্বযুদ্ধের দিকে তাকালে দেখা যাবে এই দুই যুদ্ধ সম্পূর্ণ নতুন কিছু শিল্পের জন্ম দিয়েছে। মেশিনগান থেকে যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, জেট ইঞ্জিন এবং পারমাণবিক বোমার মতো মারণাস্ত্রের উদ্ভব হয়েছে। আজকের দিনে যুদ্ধ মানে ময়দানে নেমে শুধু যোদ্ধাদের এগিয়ে যাওয়া নয়। বরং আরও অনেক বেশি করে তথ্য ও প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে এগিয়ে চলা। বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রেও এসে গিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও সৈনিকদের বড় হাতিয়ার হতে চলেছে। তথ্য ও প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসী যোদ্ধাদের মেলবন্ধনই আগামী দিনে যুদ্ধের জয় পরাজয় চূড়ান্ত করবে।