ধর্মতলায় শাসকদল তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খোলা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। সোমবার মেয়ো রোডে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট অভিযোগ করেন, বিজেপির কথাতেই এই কাজ করেছে সেনাবাহিনী। তাই তিনি ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে দেখে প্রায় ২০০ জওয়ান সেখান থেকে ছুটে পালায়। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই ঘটনায় প্রমাণ হয়ে গেল বিজেপি বাংলা বিরোধী মনোভাব নিয়ে চলছে।
ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর হামলা এবং বাংলা ভাষার উপর আঘাতের প্রতিবাদে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনা চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। মূলত ধর্না চলে শনি ও রবিবার। তবে প্যান্ডেল থাকে সপ্তাহ জুড়েই। ওই এলাকা সেনাবাহিনীর দখলে। তাই সেখানে সভা করার জন্য সেনাবাহিনীর থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ওই প্যান্ডেল ছিল বলে অভিযোগ। তা নিয়েই যাবতীয় সমস্যা সূত্রপাত।
প্যান্ডেল খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে ইস্টার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুদিনের জন্য প্যান্ডেল করার অনুমতি নিয়েছিল। কিন্তু ২দিন বলে দিনের পর দিন মঞ্চ বেঁধে রাখা হয়েছে। সেকারণেই মঞ্চ ও প্যান্ডেল খুলে ফেলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী নয় এটা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ক্ষমতার জোরে তৃণমূলের মঞ্চ ভেঙে দিতে চাইছে। পিছেমে কোন হ্যায়? কৌন ছুপা রুস্তম।” মেয়ো রোডে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হুশিয়ারি, বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কেউ ছেলেখেলা করলে তিনি কখনওই চুপ করে বসে থাকবেন না। গোটা বাংলা এর প্রতিবাদ করবে।
মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে যেতেই মেয়ো রোড ছেড়ে চলে যান সেনা জওয়ানরা। কারণ তাঁরা কোনও রকম বিতর্কে জড়াতে চাননি। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ নিয়ে আপত্তি থাকলে সেনাবাহিনী তাঁকে বা পুলিসকে বলতে পারত। পুলিশকে না বলে এভাবে মঞ্চ খুলে দিয়ে তারা ঠিক কাজ করেনি। তবে বিজেপি এভাবে ভাষা আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না। প্রয়োজনে তিনি আরও বড় মাপের আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিজেপি এভাবে তাঁর ও তৃণমূলের উপর যত অত্যাচার করবে ততই ওরা দেশ থেকে মুছে যাবে। এটা অন্যায়, অনৈতিক।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, তাঁকে দেখে কেন জওয়ানরা চলে গেলেন? অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী এও জানান যে, সেনাবাহিনীর জন্য তিনি ও তাঁর দল গর্ববোধ করেন।
এদিনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের সরকার ও বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “এখন সব কেন্দ্রীয় সংস্থাই কেন্দ্রের ললিপপ হয়ে গিয়েছে। বাকি ছিল শুধু সেনা। আমি ভেবেছিলাম সেনাবাহিনীকে বিজেপি সরকার ললিপপ বানাতে পারবে না। কিন্তু আমার ভাবনা যে ভুল ছিল আজকের ঘটনা তার প্রমাণ।
