তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে করা “মাথা কেটে টেবিলে রাখা হোক” মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন। কৃষ্ণনগরের পর এবার ছত্তিসগড়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
মহুয়া মৈত্র দাবি করেন, তাঁর মন্তব্যটি ইংরেজি ও বাংলার প্রচলিত ‘ইডিয়ম’ (প্রবাদ) ছাড়া কিছুই নয়। তিনি বলেন, “এই প্রবাদটাই বাংলায় বলা হয় ‘লজ্জায় মাথা কাটা যাওয়া’। এটি প্রতীকী রূপক। ইডিয়টরা ইডিয়ম বোঝে না।”
লোকসভা ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “২০২৪ সালে বিজেপির ‘আবকি বার ৪০০ পার’ স্লোগান ভেস্তে যায়। বিদেশি সংবাদমাধ্যম এটিকে ‘মোদির গালে চড়’ বলেছিল। তার মানে কি কেউ সত্যিই মোদির গালে চড় মেরেছিল ? অনেকেই বলেছিলেন ‘Heads will roll’। এর মানে কি সত্যিই কারও মাথা কাটা হয়েছিল? না, এটা বলার মানে জবাবদিহি বোঝানো হয়েছিল।”
রবিবার ছত্তিসগড়ের রায়পুরে গোপাল সামন্ত নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। অভিযোগে বলা হয়, তাঁর মন্তব্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে অপমান করেছে, ঘৃণা ছড়িয়েছে এবং জাতীয় ঐক্যে আঘাত হেনেছে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মহুয়া বলেন, “ছত্তিসগড়ের কোন্ডাগাঁওয়ে অভিবাসী বাঙালি শ্রমিকদের মিথ্যা এফআইআর-এ ফাঁসানো হয়েছিল। তাঁদের মারধর করা হয়েছিল, আদালতে হাজির না করেই আটকে রাখা হয়েছিল।”
তিনি জানান, ওই ঘটনায় ছত্তিসগড় হাইকোর্ট নোটিস জারি করার পর পুলিশ পিছু হটে। আরেকটি প্রবাদ টেনে তিনি বলেন, “With tail between legs, কোন্ডাগাঁও এসপি শেষমেশ এফআইআর প্রত্যাহার করেন।”
মহুয়ার দাবি, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করে এফআইআর করা হয়েছে। “আমি বলেছি মাথা কেটে টেবিলে রাখা, এটি রূপক। কিন্তু এফআইআরে লেখা হয়েছে গলা কেটে দেওয়া। ভুয়ো এফআইআর দাখিল করতে গিয়ে ইংরেজি না জেনে অনুবাদ করার জন্য গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্য নিতে গেলে এই কাণ্ড ঘটে।”
নদিয়া জেলায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “দেশের সীমান্ত রক্ষা করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব। অমিত শাহ তা এড়িয়ে গিয়ে দায় চাপাচ্ছেন রাজ্যের ঘাড়ে। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ বাংলাদেশ থেকে ঢুকছে, আমাদের জমি দখল করছে, নারীদের হুমকি দিচ্ছে। যদি সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেউ না নেন, তাহলে অমিত শাহকেই জবাবদিহি করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বহুবার অভিযোগ করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের মদত দেয় এবং তাদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে।