অস্থির বিশ্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাদাগিরির জেরে যে এত তাড়াতাড়ি মেরুকরণ স্পষ্ট হবে তা সম্ভবত জানা ছিল না মার্কিন প্রেসিডেন্টের অতি বড় সমর্থকেরও। চিনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনকে ঘিরে যা ঘটে চলেছে তা হোয়াইট হাউসের কপালে ভাঁজ ফেলতে বাধ্য। আমেরিকার সঙ্গে তিন দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যেই এসসিও সম্মেলনে দেখা গেল নরেন্দ্র মোদি, ভ্লাদিমির পুতিন ও শি জিনপিংয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডা, করমর্দন ও হাসিমাখা মুখ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একসঙ্গে হাসিমুখে কথা বলছেন। সেই ২০১৮ সালের ব্রিকস সম্মেলনের পর এমন ছবির আর নাগালই পাননি বাঘা বাঘা মিডিয়া ফটোগ্রাফারেরা। সম্মেলনের ফাঁকে মোদি ও পুতিনের করমর্দন ও আলিঙ্গনের ছবিও প্রচার করা হচ্ছে গুরুত্ব দিয়ে।
রবিবারই প্রায় ৫০ মিনিট ধরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সীমান্ত সমস্যা সমাধান ও পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। উদ্বোধনী বক্তব্যে মোদি বলেন, “আমরা পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে ভারত-চিন সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাজানে গত বছর আমাদের গঠনমূলক আলোচনা হয়েছিল, যা ইতিবাচক দিশা দিয়েছে। সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।” সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মোদি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেন, যেখানে অংশ নেন ২০-র বেশি বিদেশি নেতা ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান।
উদ্বোধনী ভাষণে শি জিনপিং বিশ্বব্যবস্থায় ‘বুলিং প্রবণতা’র কড়া সমালোচনা করে বলেন, শীতল যুদ্ধের মানসিকতা ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে হবে। শি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন চিন এসসিও-কে এমন এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় যা আমেরিকা-কেন্দ্রিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করবে। ভারত ছাড়াও এসসিও-তে বর্তমানে সদস্য দেশগুলি হল চিন, রাশিয়া, পাকিস্তান, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও বেলারুশ। এছাড়া ১৬টি দেশ রয়েছে পর্যবেক্ষক সহযোগী হিসেবে।