গোটা দেশজুড়ে পথ কুকুরদের নিয়ে একটা বিতর্ক চলছে। এক দিকে যেমন পথকুকুরের সংখ্যা বাড়ছে তেমনই বেড়ে চলেছে কুকুরের কামড় ও সে কারণে মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু এক পরিসংখ্যান বলছে ২০২৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে পথ কুকুরদের আক্রমণের ঘটনা অনেকটাই কমেছে। রাজ্য পশুপালন দফতরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে ১০২৬৪ টি কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪-এ রাজ্যজুড়ে পথকুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছিল ৭৬ হাজার ৪৮৬টি। ২০২২ ও ২০২৩ সালে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ছিল ২২ হাজার ৬২৭ এবং ৪৮ হাজার ৬৬৪।
চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে পথকুকুরের কামড়ের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। সর্বাধিক কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে গুজরাতে। তারপরই রয়েছে যথাক্রমে কর্নাটক ও বিহার।
প্রশ্ন হল, পশ্চিমবঙ্গের কুকুরের কামড়ের সংখ্যা কমল কীভাবে? রাজ্য পশুপালন দফতর বলছে, কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যেই পথকুকুরদের নিয়মিত নির্বীজকরণ করার কাজ চলছে। পাশাপাশি বহু পশুপ্রেমী সংস্থা এগিয়ে এসেছে এই অবলা প্রাণীদের দত্তক নিতে। এই দুইয়ের প্রভাবেই কমছে কুকুরের আক্রমণের ঘটনা। নির্বীজকরণের কারণে কুকুরের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ২০১৯ সালে যেখানে রাজ্যে ১১.৪ লক্ষ কুকুর জন্ম নিয়েছিল, ২০২২ সালে সেটাই কমে এসেছে ১০ লাখের নীচে। ২০২২ সালের পর এ রাজ্যে জলাতঙ্কে মাত্র ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৪ সালে গোটা দেশে জলাতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বাংলায় প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার কুকুরের নির্বীজকরণ করা হয়। বাংলায় সরকারি উদ্যোগে যেমন পথকুকুরদের নির্বীজকরণের কাজ চলছে তেমনই এগিয়ে এসেছে বহু স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানও।
রাজ্যের পশু পালন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেছেন, গত বছর কুকুরের আক্রমণের ঘটনা বাড়তেই সরকার আরও সক্রিয় হয়েছে। দ্রুতগতিতে চলছে নির্বীজকরণের কাজ। সরকারকে এই কাজে সহযোগিতা করতে বহু সেচ্ছাসেবী সংস্থাও এগিয়ে এসেছে। যার ফলে বাংলায় আগামী দিনে কুকুরের আক্রমণের ঘটনা আরও কমবে বলে মন্ত্রী আশাবাদী। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আরও বলেছেন, এই মুহূর্তে কলকাতায় পথকুকুরের সংখ্যা প্রায় ৮৪ হাজার। তাঁদের লক্ষ্য হল কলকাতায় প্রতিদিন ৩০০ কুকুরের নির্বীজকরণ করা। তবে কিছু কিছু জায়গায় স্থানীয় বাসিন্দারা কুকুরদের নির্বীজকরণের কাজে বাধা দেয় বলেও মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন।