তেলেঙ্গানার প্রধান বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-এ বড়সড় দলীয় কোন্দল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)-এর মেয়ে ও দলের বিধায়ক কে কবিতাকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিআরএস নেতা টি রবীন্দ্র রাও এবং সোমা ভরত কুমার যৌথ বিবৃতিতে জানান, কবিতার সাম্প্রতিক মন্তব্যকে “দলবিরোধী কার্যকলাপ” হিসেবে চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিআরএসের সরকারি এক্স হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে, “সম্প্রতি কে কবিতার আচরণ ও ধারাবাহিক দলবিরোধী কার্যকলাপ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। তাই দলের সভাপতি কে চন্দ্রশেখর রাও অবিলম্বে তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
সোমবার কবিতা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, তাঁর খুড়তুতো ভাই ও প্রাক্তন সেচমন্ত্রী টি হরিশ রাও এবং প্রাক্তন রাজ্যসভার সদস্য জে সন্তোষ কুমার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী এ রেভন্ত রেড্ডির সঙ্গে আঁতাঁত করে কেসিআরের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, “কেসিআরের নামে দুর্নীতির কলঙ্ক কেন লাগল তা বিচার করে দেখা দরকার। হরিশ রাও কি পাঁচ বছর সেচমন্ত্রী থেকে কোনও ভূমিকা রাখেননি? এজন্যই দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি আর ওই দফতরে ফেরেননি।”
কবিতা আরও অভিযোগ করেন, রেভন্ত রেড্ডি আসলে হরিশ রাও এবং সন্তোষ কুমারকে রক্ষা করছেন। যদিও তিনি আশ্বাস দেন যে তাঁর বাবা কেসিআর “মুক্তোর মতো নির্মল” হয়ে সিবিআই তদন্ত থেকে বেরিয়ে আসবেন।
এই বিতর্কের সূত্রপাত কংগ্রেস সরকারের সিদ্ধান্তে। কালেশ্বরম লিফট সেচ প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় তারা। ঠিক সেই দিনই কবিতার ভাই ও বিআরএসের কার্যকরী সভাপতি কে টি রামা রাও প্রকাশ্যে হরিশ রাওয়ের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কালেশ্বরম প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় হরিশ রাওয়ের বক্তব্য ছিল “মাস্টার ক্লাস”।
কবিতা ও দলের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই তিক্ত। জুলাই মাসে কেটিআর একটি প্রভাবশালী কয়লা শ্রমিক ইউনিয়নের দায়িত্ব কপ্পুলা ঈশ্বরকে দেন, যেখানে আগে সম্মানীয় সভাপতি ছিলেন তাঁর বোন কবিতা। এতে ‘কেটিআর বনাম কবিতা’ ভাই-বোনের দ্বন্দ্ব ফের তীব্র হয়।
মে মাসে ফাঁস হয় কবিতার লেখা এক গোপন চিঠি, যেখানে তিনি তাঁর বাবা কেসিআরের আশেপাশে থাকা “শয়তানদের” ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন।
তবে এক সাক্ষাৎকারে কবিতা দাবি করেন, তাঁর ভাই কেটিআরের সঙ্গে কোনও বিভেদ নেই। বরং তিনি বলেন, “আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, কেউ সেটা ভাঙতে পারবে না।” একইসঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দেন, দলে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা এখনও প্রবল, ফলে নেত্রীরা প্রাপ্য সুযোগ পান না।