জামতাড়া নয়, হুগলি থেকেই চলছিল প্রতারণা চক্র! এবার ভুয়ো সিমকার্ড চক্রের পান্ডাকে গ্রেফতার করল হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। ধৃতের নাম বাপন দোলুই। ধৃতের কাছ থেকে পুলিশ বিপুল সংখ্যক ভুয়ো সিম কার্ড উদ্ধার করেছে। হুগলি জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে ধনেখালি, তারকেশ্বর এলাকায় এই ভুয়ো সিম কার্ডের চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। আর এই ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। অভিযোগ এমনটাই।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় সম্প্রতি ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে একাধিক আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ে। সেই রকমই কয়েকটি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়ে সাইবার ক্রাইম থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক সরকারের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। তদন্তে প্রকাশ্যে আসে যে তারকেশ্বর থানার জ্যোৎশম্ভু এলাকায় একটি ভুয়ো সিম কার্ড চক্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। সেখানকার একটি রিটেলারের মাধ্যমে প্রচুর সংখ্যক ভুয়ো সিম কার্ড তৈরি করা হচ্ছে এবং সেই সিম কার্ডগুলি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করা হচ্ছে। শুধু হুগলিতেই নয় সারা দেশ জুড়ে এই সিম কার্ডগুলি ব্যবহার করেই আর্থিক প্রতারণা করে ব্যাংকের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রতারকরা। তদন্তে দেখা যায় এখনও পর্যন্ত এই চক্রটি এই সিমকার্ডগুলি ব্যবহার করে সুপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৬১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সাইবার ক্রাইম বিভাগে একটি মামলা দায়ের হওয়ার পর তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর মন্দিরা সাহার হাতে।
তদন্তকারী অফিসার তদন্তে নেমে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার ধনিয়াখালির মদনমোহনতলা থেকে এই ভুয়ো সিম কার্ড চক্রের পান্ডা বাপন দোলুইকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে চন্দননগর মহাকুমা আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। ধৃতকে জেরা করে জানা যায় এই পয়েন্ট অফ সেল থেকেই ক্রেতারা ক্রয় সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন করার সময় বাপন মোবাইল ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে প্রতারণা চালাত। এই ভুয়ো সিমকার্ড চক্রের মাথা পুলিশের জালে ধরা পড়ায় আগামী দিনে এই ধরনের আর্থিক প্রতারণা অনেক কমবে বলে মনে করছে পুলিশ। পাশাপাশি এই ভুয়ো সিমকার্ড চক্রের সঙ্গে আরও কোন প্রতারক জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
