পহেলগামে ২৬ জন পর্যটককে হত্যার দায় স্বীকার করা লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)-এর অর্থ জোগান নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। এনআইএ-র দাবি, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির মাধ্যমে এই জঙ্গি সংগঠন অর্থ পেয়েছে, যা দিয়ে তারা ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল।
এনআইএ তদন্তকারীরা মোট ৪৬৩ টি ফোনকল বিশ্লেষণ করেছেন, যা ভারতে চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের সমর্থকদের সঙ্গে যুক্ত। এই কল রেকর্ড, মোবাইল ডেটা, সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট, ব্যাঙ্ক লেনদেন থেকে পাওয়া সূত্রেই স্পষ্ট হয়েছে টিআরএফ-এর বিদেশি অর্থ চক্র।
তদন্তে উঠে এসেছে, মালয়েশিয়ার বাসিন্দা ইয়াসির হায়াত টিআরএফ-কে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা জোগান দিয়েছে। এর পাশাপাশি লস্করের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি সাজিদ মিরের নেটওয়ার্কের সঙ্গেও টিআরএফ-এর যোগসূত্র মিলেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীনগর ও হান্দওয়াড়ায় এনআইএ-র অভিযানে টিআরএফ-এর বিদেশি অর্থের সঙ্গে যুক্ত একাধিক নথি উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও উৎসের নির্দিষ্ট তথ্যও।
এনআইএ-র হাতে পাওয়া তথ্য এখন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (FATF)-এর কাছে পাকিস্তানকে চাপে ফেলতে ভারতের হাতিয়ার হতে চলেছে। ভারত বহুদিন ধরেই পাকিস্তানকে FATF -এর গ্রে-লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তান ২০১৮ সালের জুনে গ্রে-লিস্টে ঢোকে, তবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরেই তা থেকে বাদ পড়ে। গ্রে-লিস্টে থাকার অর্থ, বিদেশি অর্থসাহায্য ও ঋণ পেতে পাকিস্তানকে বাড়তি নজরদারি ও কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এর দায় স্বীকার করে টিআরএফ। মে মাসেই ভারতীয় গোয়েন্দারা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পাকিস্তানের অর্থ জোগান সংক্রান্ত প্রমাণ ভারতের হাতে রয়েছে। এবার এনআইএ-র সর্বশেষ তদন্ত সেই সন্দেহকেই পাকাপোক্ত করল।