চটে যাওয়া চাট্টি কথা!
দিব্যেন্দু ঘোষ
এই মুহূর্তে তাঁর হাতে কাজ নেই। নিজেই বলেছেন একাধিক সাক্ষাত্কারে। টলিউডে কেউ তাঁকে ডাকছেন না অভিনয়ের জন্য। না কোনও পরিচালক, না কোনও প্রযোজক। কেন? তিনি তো ডিরেক্টরও। সে কাজও নেই। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র মতো সিনেমা হোক বা ‘মন্দার’-এর মতো ওয়েব সিরিজ তারই নির্দেশনা, ‘তালমার রোমিও জুলিয়েট’ কিংবা ‘ভূততেরিকি’র ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর তিনি। ‘সাবধান ইন্ডিয়া’ নামে একটি ক্রাইম টেলিভিশন সিরিজের জন্য প্রযোজনা, লেখা এবং পরিচালনাও করেছেন। লাইফ ওকে চ্যানেলে সম্প্রচারিতও হয়। আধুনিক বাংলা নাটকেও তিনি দুরন্ত এক পরিচালক। ২০১০ সালে নিজের নাট্যদল ‘সংঘরাম হাতিবাগান’ তৈরি করেন। পরিচালনা করেন গুরু, চৌমাথা, উদরনীতি, পন্টু লাহা ২.০।
হাতে কাজ না থাকলেও গলায় গান আছে। গলাটা তাঁর ভালই। ২০১৮ সালে, তিনি ছবিতে প্লেব্যাকও করেন। সৃজিত মুখার্জির ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছবিতে। ‘কিচ্ছু চাইনি আমি’ গানে কণ্ঠ দেন। প্রচুর জনপ্রিয়তা পায় সে গান। ২০২০ সালে ‘ড্রাকুলা স্যার’ ছবিতেও ‘প্রিয়তমা’ গানে কণ্ঠ দেন। ফলে, গানটা তাঁর গলায় আছে। খোলে ভাল। যে গলা স্পষ্ট কথা বলে, অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করার সাহস দেখায়, ‘রঘু ডাকাত’-এর পর এই মুহূর্তে টালিগঞ্জে আমার হাতে আর কোনও কাজ নেই কথাটা যে গলা উচ্চস্বরে বলে, সেই গলা যে অন্য কিছু ভাবছিল, তা স্পষ্ট।
ইংরেজি ‘হুলিগান’ শব্দের অর্থ কী? দুর্বৃত্ত। গুন্ডাগিরি। কিন্তু এই শব্দটাই একটু অন্যভাবে ব্যবহার করে ব্যান্ডের নামকরণ করেছেন অনির্বাণ। মজা আছে, টিপ্পনি আছে, চিমটি আছে, গান আছে, রাজনীতির টিকা আছে, হুল ফোটানোও আছে। এই তো সেদিন ‘একেনবাবু’-র ‘প্রমথবাবু’ সোমক ঘোষ প্রশ্নটা করেই বসলেন অভিনেতাকে, ‘গান না হয় বুঝলাম, ইজমটাও বুঝলাম, কিন্তু হুলিটা কে? তুমি?’ হাসতে হাসতে অনির্বাণের উত্তর, ‘না না, আমি নয়, বরং কেউ নয়, গানের কথা একটু অন্যভাবে লিখে একটু অন্যরকম পরিবেশনার মধ্যে একটা ব্যাপার আছে।’ ঠিকই। ক্যাওড়া, ততোধিক স্মার্ট সাজার নেপথ্যে ক্যাবলাকান্ত টাইপ যথেচ্ছ হিট। পাশাপাশি সেই হুল যে কোথায়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বঙ্গ রাজনীতির তিন ঘোষ। আরেক ঘোষও রাজনীতির, তবে রুপোলি পর্দায় তিনি আবার অনির্বাণের সতীর্থ, সেই ঘোষ তো রেগে আগুন। কোমর বেঁধে নেমেছেন অনির্বাণকে তুলোধোনা করতে।
আসলে সমস্যার গোড়ার কথা কয়েক মাস আগে। ১৪ মে SVF-এর ব্যানারে, হুলি গান ইজমের একটা গানের মিউজিক ভিডিয়ো শুট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টেকনিশিয়ানদের অসযোগিতার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় সেই শুটিং। কারণ, টেকনিশিয়ানদের অনির্বাণ-বয়কট। গত বছর পুজোর আগে থেকে শুরু হয় টেকনিশিয়ান এবং পরিচালক দ্বন্দ্ব। ফেডারেশনের জোর-জুলুম এবং তার সঙ্গে টেকনিশিয়ানদের অসহযোগিতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে টলিপাড়ায় এক অসংগতি তৈরি করে। পরিচালকরা বহু কাজ করতে চেয়েও পারেননি। ফেডারেশনের কিছু পদক্ষেপের বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধে হাঁটেন কয়েকজন পরিচালক। সেই তালিকায় রয়েছে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের নাম। অনির্বাণকে সে কারণেই বয়কট। যদিও ফেডারেশনের কোনও অফিশিয়াল বিবৃতি নেই। সে যাই হোক, অনির্বাণের মতো শিল্পী টলিউডে কাজ পাবেন না, সেটা লজ্জার। কিন্তু তিনি শিল্পী, সে ছাপ থাকবেই। হুলি গান ইজমের প্রথম শো-তেই সেই জাত শিল্প প্রকাশ্যে। তাঁর এবং এই সময়ের আরেক দুর্ধর্ষ অভিনেতা দেবরাজ ভট্টাচার্যর গান-কথা তো বাদই দিলাম, গানের কথায় ছোবল। রাজনীতির ওপর কষাঘাত। স্যাটায়ারের দোর্দণ্ড মাত্রা। তিন রাজনৈতিক দলের তিন প্রভাবশালীকে চটিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। গানের কথাতেই রয়েছে সে সুর, ‘চটে যাবেন কুণাল ঘোষ…
কেন তিন ঘোষকে অ্যাটাক করলেন অনির্বাণ? লোকে ভাল খাবে। এখন তো সাধারণ মানুষের যাপনের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে রাজনীতি। ফলে, গানেও রাজনীতি গুঁজে দিলে হিট। তুমুল চর্চা। দেদার ভিউ, ফলো। লাভটা হাতে কাজ না থাকা অনির্বাণ অ্যান্ড বন্ধুবরদের। স্বাভাবিক। একের পর এক শো জুটবে। কিন্তু প্রশ্ন, রাজনীতির রং কতটা চড়েছে? গরম কড়াইয়ে ফুটতে থাকা তেলে শুকনো লঙ্কা পড়েনি তো? পুজোর আগে ‘অচ্ছে দিন’ আসবে কি গানের সুরের পথে হেঁটে? গানে বোমা বোধহয় একেই বলে। অনির্বাণ পেরেছেন। পারতে হত। হুলি গান ইজম হিট না হলে অনির্বাণের কেরিয়ারের দফারফা। তুরুপের তাস খেললেন। বলা ভাল, এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। চিমটিটা ভালই কাটলেন। অনির্বাণের ‘ব্যান্ড স্টর্ম’ই বটে। ঝড় তুলে দিল অনির্বাণ ভট্টাচার্য, দেবরাজ ভট্টাচার্য, শুভদীপ গুহদের গানের দল ‘হুলি গান ইজ়ম’। তার পর থেকেই তাঁদের গান ‘তুমি মস্তি করবে জানি’ সোশাল মিডিয়া কাঁপাচ্ছে। বিদ্রুপের বান লক্ষ্যে বিঁধেছে। এমন এক রাজনৈতিক সময়ে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে রাজ্যের তিনটি প্রধান দলের ৩ নেতাকে নিয়ে এভাবে প্যারোডি লিখতে এবং গাইতে দম লাগে।
গানের কথায় কখনও মোদি, এসআইআর এবং ‘অচ্ছে দিন’-এর কথা, কখনও আবার কুণাল ঘোষ, দিলীপ ঘোষ এবং শতরূপ ঘোষের কথা। ‘এসব গান-বাজনা ছাড়, চল প্রোমোটারি করি, বড় গাড়ি চড়ি/ইলেকশনের মেজাজ বুঝে দলটা বদল করি’। আবার ‘এই আমাদের দোষ/গানবাজনা করতে এসে এ সব কথা বললে/রেগে যাবে কুণাল ঘোষ।’ পরমুহূর্তেই গাইছেন, ‘আরেক ঘোষও আছে/দাদা খুবই রোমান্টিক/ঘোষ দিয়ে যায় চেনা/গয়না দোকান সব তুলে দাও/গরুর দুধে সোনা।’ দেবরাজ গেয়ে ওঠেন, ‘আরেক ঘোষও আছে, ওই বিপ্লবীদের পার্টি/টিভি চ্যানেল, পার্টি অফিস বড্ড হাঁটাহাঁটি/তাই কিনেছে গাড়ি/দামটা বেশি খুব/ফেসবুকেতেই রাজা, মোদের দাদা শতরূপ।’
আরজি কর কাণ্ডের পর অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে সেই অর্থে প্রতিক্রিয়া দিতে বা প্রতিবাদে দেখা যায়নি। তার পরেও ফেডারেশন বনাম ডিরেক্টরস গিল্ডের সমস্যায় কার্যত কোণঠাসা। হাতে সেই অর্থে কোনও কাজ নেই। তখনই তিনি বলেছিলেন, তাঁর কাছে দুটো অপশন ছিল, এক রাজনৈতিক দল তৈরি করা, দুই গানের দল তৈরি করা। গানের দল তৈরি করাই ভাল। কারণ তিনি জানতেন, লোককে খাওয়াতে হলে রাজনীতিটা ঢোকাতে হবে, আর কিছু লোককে যদি টার্গেট করা যায়, তা হলে বেশ হয়, বিশেষ করে এমন কিছু মানুষ, যাঁরা খবরে থাকেন, বিতর্কেও থাকেন। আসলে বিতর্কে না থাকলে খবরে থাকাও মুশকিল। ভালই জানেন অনির্বাণ। তাই রাজনৈতিক দল তৈরি না করেও গানে গানে রাজনীতিকে বিদ্রুপ করলে বাজারে কাটবে ভাল।
তবে গান শুনে চটলেন কি তিন ঘোষ? না। তবে এক ঘোষ চটেছেন। তিনি আবার অনির্বাণের গানের এই তিন ঘোষের মধ্যে নেই। তাঁর কথায় পরে আসছি। কুণাল ঘোষ চটলেন না কেন? কয়েকদিন আগেই এক জুনিয়র সাংবাদিককে ভেংচে বিপুল খোরাক হন। সোশাল মিডিয়ায় খিল্লির বন্যা বয়ে যায়। আর অনির্বাণ এমন কিছু বলেননি যে, তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। তিনি শুধু খোঁচা মেরেছেন। চিমটি কেটেছেন। সে খোঁচা বা চিমটি তো রাজনীতিতে জলভাত। কুণাল ঘোষ রাগলে আরও হাস্যাস্পদ হতেন। তাই মজা নিয়েছেন। বলছেন, মজা লেগেছে, ভাল লেগেছে। গানের ধরন, উপস্থাপনাও ভাল। একটু তির্যক? তাতে কী? কুণাল ঘোষ এ সব মজা নিতে জানে। অনির্বাণের এই গান মোদি থেকে দিলীপ ঘোষ হয়ে কুণাল ঘোষের নাম বেয়ে শতরূপ ঘোষ হয়ে অর্থাৎ দেশ থেকে বাংলাতে এসে মিশে ঘোষিত হচ্ছে, চর্চিত হচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তির্যক করে তুলে ধরে। মানে, ভ্যারাইটি। রাজনীতির গোটা পরিসরকে স্যাটায়ারের ফলায় গেঁথে মনোগ্রাহী উপস্থাপনা। ভাই খুব সেয়ানা। ‘নিরপেক্ষ’ পেটো ঝেড়েছে। কিন্তু ভাইয়ের সরু লাইন। আলতো চেটে রেখেছে। যে বুঝেছে, সে শুনেছে। ভাই, কাজ ফিরেছে? ভাই, সবাই দেখেছে। এ ভাই, সবাই শুনেছে। ভাই কাকে কত ডোজ দিয়েছে, তা সবাই মেপেছে। যে যা মাপে মাপুক, যে যা ভাবে ভাবুক, ভাই এই আকালেও ‘নিরপেক্ষ’ তাস ছুড়ে মেরেছে। ভাই, শাসকের চাবুক লেগেছে। ওরা বড্ড হেসেছে। দুষ্টু-মিষ্টি ভাইটি। বেছে বেছে যত ঘোষদেরই কেস ধরেছে। সেখানেও ওজনে কারচুপি-দোষ করেছে। সে সব তো ভাই সবাই করে। ভাইটিও একই পথে হেঁটেছে। তাতে কী! নিরপেক্ষ বলে নাম তো ফেটেছে।
চটা চাট্টিখানি কথা নয় ঠিকই। কুণাল, দিলীপ, শতরূপ বুঝেছেন, কিন্তু বিজেপির নীল বুঝলেন না। রুদ্ররোষে ছারখার করে দিতে চান। অনির্বাণকে তোপ ‘চতুর্থ ঘোষ’-এর। গানের লিরিক্সে ‘সনাতন ধর্ম’। তাই একহাত রুদ্রর। রে রে করে উঠলেন অভিনেতা ও নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।
“সনাতন এসে গেছে… আর সনাতনী? …সনাতন মানে আমি সনাতন ধর্মের কথা বলছি… আসেনি তো এখনও? …সনাতন ভারতে পৌঁছতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে… সবাই এগিয়ে যায়… আমরা পিছিয়ে যাব!”
এই অংশ শুনেই মেজাজ হারিয়েছেন ‘চতুর্থ ঘোষ’। নিজে ছড়া কেটে চাটেন শাসক দলকে, অথচ অনির্বাণের ছড়ায় অ্যালার্জি। বোমা ফাটিয়েছেন। অনির্বাণকে বললেন, ‘ক্ষমা চাইতে হবে’। সোশাল মিডিয়ায় রুদ্রনীল ধরলেন কলম, ছড়া কাটতে যে তিনিও মাস্টার। তবে এবার আর কোনও মজা নয়, সরাসরি চোখরাঙানি। লিখলেন, “বন্ধুবর অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আপনার এই অসচেতন, জ্ঞানহীন বক্তব্যের। …ভাই, অণির্বাণ পৃথিবীর চূড়ান্ত মূর্খ ব্যক্তিও জানেন সনাতন ধর্ম পৃথিবীর আদিতম ধর্ম বা জীবনচর্চা। তারপর বাকি ধর্মগুলির জন্ম। আর আপনি বললেন, “সনাতন এসে গেছে?” “সনাতন ভারতে পৌঁছতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে!” আপনি সজ্ঞানে বললেন এই কথা? অন্য কোনও ধর্ম সম্পর্কে এই ধরনের উক্তি করলে তাঁরা এতক্ষণে আপনাকে কোন স্থানে রাখতেন নিশ্চয়ই জানেন!”
রুদ্র অনির্বাণের সেই জায়গায় আঘাত করলেন। কাজের জায়গায়। কেরিয়ারের জায়গায়। জানেন, খোঁচাটা ওখানে দিলে লাগবে ভাল। “সবাই জানে, টলিউড মাফিয়ারা আপনার কাজ কেড়ে নিয়েছে, তাই গান গেয়ে পেটের ভাত জোগাড় করতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক! কিন্তু, যে “হুলিগানরা” আপনার পেটের ভাত কাড়ল তা নিয়ে বা আরজিকর ডাক্তার হত্যা নিয়ে বা শিক্ষক পেটানো, শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে আপনার মুখে কুলুপ! অথচ অকারণ ছোট করছেন নিজের ধর্মকে? সনাতন ও সনাতনীকে? কাকে খুশি করতে?” প্রাসঙ্গিক। নিয়োগ দুর্নীতি হোক বা আরজিকর, অনির্বাণ তেমন সরব হননি। কুণাল ঘোষকেও বেঁধার ডোজটা বাড়াবাড়ি নয়। কুণালও চটেননি। দিলীপ, শতরূপও নয়। শতরূপ তো বলেইছেন, “নতুন একটা গানের ব্যান্ড যেভাবে সোসিও পলিটিক্যাল স্যাটায়ার করল সেটা আমার খুব ভাল লেগেছে। আমরা সবসময় চাই আর্টিস্টরা পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড নিক। রাজনৈতিক মতামত থাক। আমার নাম নিয়েছে আমি তো কৃতজ্ঞ। তাতে যদি কোনও তির্যকতা থেকে থাকে আমরা মনে করি আমাদের সমালোচনা শিল্পের মাধ্যমে উঠে আসতেই পারে। শিল্প তো একটা আয়না।” তবে ধর্ম নিয়ে এই স্যাটায়ার মানতে নারাজ রুদ্রনীল। তাই হুঁশিয়ারি। ক্ষমা চাইতে হবে। “ভাই অনির্বাণ, যদি সত্যই নিজের অজ্ঞানতা থেকে এই বক্তব্য রেখে থাকেন তাহলে জানান। দেখবেন সমস্ত সনাতনী দল-মত-ঝান্ডা ভুলে আপনাকে ক্ষমা করবেন ও ভবিষ্যতে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করার অনুরোধ করবেন। আর যদি সজ্ঞানে থেকে এই ধরনের মন্তব্য করে থাকেন, তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিন। সনাতন ধর্ম আদি ও অনন্ত। আপনি আমি দুনিয়ায় থাকি বা না থাকি, সনাতন-সনাতনী ছিল আছে ও থাকবে। ভাল থাকবেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য।”
মানে, অনির্বাণকে চমকালেন রুদ্রনীল। সনাতন ধর্ম নিয়ে কি একটু বাড়াবাড়িই করে ফেললেন অনির্বাণ?
ফিউশন পোশাকের অভিনবত্ব। নায়ক-পরিচালক-গায়ক-সহ দলের প্রত্যেকের মাথায় ব্যান্ড পার্টি টুপি। ঢিলে প্যান্ট, সাদা জুতো, মজার একটা ব্যাপার ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা। এই প্রজন্মকে আকর্ষণ করাই লক্ষ্য। নাটকের সূত্রে অনির্বাণ, শুভদীপ, দেবরাজ, সুশ্রুত, কৃশানু পনেরো বছরের বন্ধু। অনির্বাণ মানেই মাটির গন্ধ। বেশ কিছুদিন আগে আমরা দেখেছি, অনির্বাণের প্রথম গান ‘মেলার গান’-এর টিজ়ারে তার ছায়া। ভাঙা বাড়ি, বট-অশ্বত্থ গাছের মোটা মোটা ঝুরি, শিকড়, মেঠো পথ। ঋদ্ধি সেনের ভাবনা। টিজ়ারের দৃশ্যকল্প তাঁর তৈরি। তখন থেকেই হুলি গান ইজ়ম মেনস্ট্রিম। সবাই স্বীকার করে নিয়েছেন। যে কোনও ধরনের সুস্থ সাংস্কৃতিক অভ্যাসটাই আসল হুলিগানিজ়ম। কেউ কারও মাথায় ইট ছুড়ে মারল, সেটাই এখন স্বাভাবিক। কেউ গাইলে বরং সেটা অস্বাভাবিক। তাই তাঁর গানের দলের এই নাম। নামেই চটিয়ে দেওয়ার মশলা মজুত। গানে তো হবেই। লেখা ও গান যখন অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হয়। প্রতিবাদী। কিন্তু প্রতিবাদ করলেই কাজ কেড়ে নেওয়া যায় না। কাজ কেড়ে নিয়েছে বলেই প্রতিবাদ। চটাতে চাইলেন। রঙ্গ, ব্যঙ্গ। তবুও চটলেন না তিন ঘোষ।
আসলে চটে যাওয়া কি চাট্টি কথা!
