শান্তি ফেরাতে তাঁর পথ ধরেই চলতে হবে, অনেকটা এভাবেই ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যত এঁকে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনে পশ্চিমি দুনিয়ার বন্ধুদের প্রস্তাবিত ‘নিরাপত্তা বাহিনী’ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি হলেও সেখানে যে কোনও বিদেশি সেনা মোতায়েন হলে তারাও রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। ভ্লাদিভস্তকে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে শুক্রবার পুতিন বলেন, “যদি এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায় যা দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করবে, তবে বিদেশি সেনার উপস্থিতির কোনও প্রয়োজন নেই। রাশিয়া সে ক্ষেত্রে চুক্তি মেনে চলবে।”
অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় রাজি হলেও শান্তি বৈঠক মস্কোয় হবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন পুতিন। ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের ফের রাশিয়ায় আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি। গত মাসে আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের পর এক মুহূর্তের জন্য শান্তিচুক্তির আশা জাগলেও এখন পরিস্থিতি আবার অচলাবস্থার দিকেই বলে মনে করছেন অনেকে। পুতিন শুক্রবার বলেন, “আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত, তবে তাতে খুব একটা লাভ হবে বলে মনে করি না। মূল বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব।”
তবে পুতিন না মানলেও ইউক্রেনকে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে সেদেশে সেনা পাঠাতে চায় বিভিন্ন দেশ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ২৬টি বন্ধু দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে যুদ্ধ থামার সঙ্গে সঙ্গেই তারা স্থল, নৌ বা আকাশপথে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠাবে। ম্যাক্রোঁর ভাষায়, এই বাহিনী রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না বরং নতুন করে কোনও বড় ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। কিন্তু পুতিন এ উদ্যোগকে একেবারেই মানতে নারাজ।
তবে পুতিন আপত্তি করলেও ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “ইউক্রেন একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেখানে সেনা থাকবে কি না, তা রাশিয়ার সিদ্ধান্ত মেনে হবে না।” তবে ইউরোপীয় কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, এখনই সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিলে তা পুতিনের কৌশলকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের ‘গঠনমূলক প্রচেষ্টা’র প্রশংসা করলেও ইউরোপীয় দেশগুলোর উদ্যোগকে ‘যুদ্ধ বাড়ানোর প্ররোচনা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
