দেশের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ কি খেলেই ফেললেন এল এম টেন? শুক্রবার বুয়েনস আয়ার্সে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা এবং ভেনেজুয়েলা। মেসির জোড়া গোলে এই ম্যাচে ৩-০ জয়ও ছিনিয়ে নিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেসির অবসর জল্পনা। যদিও তিনি এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি।
মেসির অবসর জল্পনা নতুন নয়। এর আগে গত ২০১৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা, ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার পর ফুটবল দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল মেসির অবসরের কথা। এরপর কাতারে গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও শোনা যায়, অবসর নিতে চলেছেন এল এম টেন। তবে এবারের বিষয়টি অনেকটাই আলাদা। বেশ কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল যে, শিক্ষক দিবসের ভোরে বুয়েনস আয়ার্সে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ম্যাচটি নীল-সাদা জার্সিতে মেসির শেষ ম্যাচ হতে পারে।
এই ম্যাচে মেসি শুধু জোড়া গোল করে দলকে জেতালেনই না। সেই সঙ্গে খেলা চলাকালীন মাঠের মধ্যেই কাঁদতে দেখা গেল তাঁকে। মেসি যখন মাঠে ঢুকছেন, ৮০ হাজার দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানায়। যা দেখে চোখের জল আর ধরে রাখতে পারেননি মেসি। এর আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে এই ম্যাচটিই তাঁর জন্য খুব স্পেশাল। এরপর আর কোনও প্রীতি ম্যাচ যে খেলতে চান না, সে কথাও সে সময় জানান তিনি।
ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে জয়ের পরও একই কথা শোনা গিয়েছে লিওর মুখে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে নামবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে মেসি জানান, তিনি ইতিমধ্যেই কোচ স্কালোনিকে জানিয়ে দিয়েছেন যে সেই ম্যাচে বিশ্রাম নিতে চান। সব মিলিয়ে এবার তাঁর অবসর জল্পনা যে একটু হলেও অন্য খাতে বইছে তা বলাই বাহুল্য। তবে ভেনেজুয়েলা ম্যাচ শেষে লিও নিজের অবসর তথা আগামী বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে আরও যে কথা বলেছেন তা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রাখতে পারে ভক্তদের।
আগামী বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় বসতে চলেছে ফিফা বিশ্বকাপের আসর। সেই প্রতিযোগিতায় খেলা প্রসঙ্গে এদিন মেসি বলেন, “আমার বয়স অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ যে খেলতে পারব না, সেটাই স্বাভাবিক। তবে যাতে খেলতে পারি তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা উজাড় করে দিচ্ছি। এই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। গোটা বিষয়টাই ভবিষ্যৎ পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করছে।”
মেসির এই বক্তব্য কিছুটা হলেও চিন্তামুক্ত করতে পারে সমর্থকদের। কারণ বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। কিন্তু সত্যিই কি খেলতে পারবেন? তা তিনি নিজেও জানেন না। তাই শিক্ষক দিবসে একজন পোড়খাওয়া হেডমাস্টারের মতোই ঘরের মাঠে ফেয়ারওয়েল নিয়ে নিলেন। কে জানে, একইসঙ্গে দেশের জার্সিতেই তাঁর ফেয়ারওয়েল হয়ে গেল কি না!
