পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রতারণার মামলায় মূল অভিযুক্ত মেহুল চোকসি। প্রতারণার ঘটনাটি সামনে আসার পরই দেশ ছাড়েন মেহুল। দীর্ঘদিন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বেলজিয়াম পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মেহুলকে প্রত্যর্পণের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। মেহুলের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পলাতক ব্যবসায়ী গুরুতর অসুস্থ। ক্যানসার থাবা বসিয়েছে শরীরে। তাই তাঁকে জেল হেফাজতে রাখা যাবে না। মেহুলকে প্রত্যর্পণের জন্য বেলজিয়ামের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভারতকে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিতে হল। যার মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত খাবার, ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের নজরদারি এবং অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয়ের ব্যবস্থা থাকবে মেহুলের জন্য।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি চিঠি পাঠিয়েছে বেলজিয়ামের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। মেহুলকে দেশে ফেরানোর পর কোন জায়গায় রাখা হবে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। বলা হয়েছে, মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাকে রাখা হবে মেহুলকে। সেখানে মেহুলের জন্য থাকবে বিশেষ ধরনের বালিশ ও বিছানার ব্যবস্থা। থাকবে পর্যাপ্ত আলো, পাখার ব্যবস্থা। তাঁর নিজের বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখার জন্যও থাকবে যথাযথ ব্যবস্থা। ওই চিঠিতে বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে সরকার আশ্বাস দিয়েছে, মেহুলের জন্য থাকবে বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং ঘণ্টায় ঘণ্টায় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিদিন মেহুল খোলা আকাশের নীচে যাতে এক ঘন্টা শরীরচর্চা করতে পারেন এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন তার ব্যবস্থাও থাকবে। যে ১২ নম্বর সেলে মেহুলকে রাখা হবে সেই সেলটি প্রতিদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
তবে মুম্বইয়ের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে মেহুলের সেলের মধ্যে কোনও হিটার বা এসির ব্যবস্থা করা হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মেহুলকে প্রতিদিন তিন বার স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দেওয়া হবে। এবং তাঁকে নিয়ম মেনে নিয়মিত ফল এবং স্ন্যাকসও দেওয়া হবে। মেহুল যাতে নিয়মিত যোগা করতে পারেন তার ব্যবস্থা এবং পড়াশোনা করতে পারেন তার জন্য লাইব্রেরির ব্যবস্থাও থাকবে। ওই চিঠিতে আরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, আর্থার রোড জেলে ২০ শয্যার একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল আছে। সেখানে কোনও সমস্যা হলে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে রয়েছে সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সমস্ত আশ্বাস বেলজিয়ামের আদালত খতিয়ে দেখবে। সে দেশের আদালত যদি মনে করে ভারত পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুলকে যথাযথভাবে খেয়াল রাখছে তবেই তাঁকে প্রত্যর্পণের নির্দেশ দেবে।