দেশে পথ দুর্ঘটনায় প্রতি ৩ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। এই তথ্য সামনে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। ওই রিপোর্ট বলছে, ভারতে গড়ে প্রতি তিন মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে পথ দুর্ঘটনায়। লাফিয়ে বাড়ছে আহতের সংখ্যাও। ২০২৩ সালে দেশে মোট ৪ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষের। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ৩ মিনিটে একজন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
সর্বাধিক ৬৭ হাজার ২১৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে তামিলনাড়ুতে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এই রাজ্যে দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন ২৩ হাজার ৬৫২ জন। তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, কেরল, কর্নাটকও।
প্রশ্ন হল, পথ দুর্ঘটনা কেন এত বাড়ছে? বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর বলছে, খানাখন্দ ভরা রাস্তা, বেপরোয়া গতি এবং মানুষের সচেতনতার অভাবেই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
পরিসংখ্যান বলছে, পথ দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর প্রায় ৪৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরবাইক ও স্কুটারে। হেলমেট না পরার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ৫৪ হাজারের বেশি মানুষের। গাড়িতে সিট বেল্ট না আটকানোয় প্রাণ গিয়েছে আরও ১৬ হাজার মানুষের।
২০২০ সালে করোনার সময় দুর্ঘটনার হার কিছুটা কমলেও তারপর ক্রমশই তা ঊর্ধ্বমুখী। ২০২৪ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যায় পশ্চিমবঙ্গ ১১তম এবং মৃত্যুর হিসেবে ১২তম স্থানে ছিল। সরকারের বিভিন্ন চেষ্টা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সত্ত্বেও, এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান দেশের সড়ক নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, হেলমেট ও সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা এবং মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রুখতে বা তার সংখ্যা কমিয়ে আনতে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে সরকার জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন জায়গায় স্পিড ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, হেলমেট ও সিটবেল্ট সংক্রান্ত নিয়ম আরও কড়া করা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়াতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিশেষ প্রচারও।