রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদের ৬০ তম অধিবেশনে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সুইজারল্যান্ড। ভারতকে ‘সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার’ পরামর্শ দেন সুইস দূত। শুধু তাই নয়, ভারতে সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলেও অভিযোগ করা হয়। এর জবাবে ইউরোপীয় দেশটিকে তাদের নিজের মাটিতে ‘বর্ণবাদ, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং জেনোফোবিয়া’ সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন ভারতীয় কূটনীতিক। অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের সমস্যার দিকে মনোনিবেশ করার জন্য সুইজারল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানায় ভারত।
সুইজারল্যান্ড, বর্তমানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি দেশ। সঠিক তথ্য না জেনে এরকম অভিযোগ করায় এই অধিবেশনেই একদিন পরে সুইজারল্যান্ডকে তুলোধনা করল ভারত। সেখানে ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সেলর বা কূটনীতিক ক্ষিতীশ ত্যাগী স্পষ্ট ভাষায় জানান যে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দিকে আঙুল তোলার আগে, নিজের দেশকে শোধরানো উচিত। এবিষয়ে ভারত সুইজারল্যান্ডকে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
ত্যাগী বলেন “সুইজারল্যান্ডের মতো ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং অংশীদারের কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য বিস্ময়কর এবং তা তথ্যভিত্তিহীন। তারা যখন মানবাধিকার পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে, তখন তাদের দায়িত্ব আরও বেশি — এবং পরিষদের সময় নষ্ট না করে মিথ্যা বয়ান ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। বরং তাদের উচিত নিজেদের সমস্যাগুলির দিকে নজর দেওয়া, যেমন বর্ণবাদ, প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য এবং বিদেশি-বিদ্বেষ। বিশ্বের বৃহত্তম, বহুমুখী এবং জীবন্ত গণতন্ত্র হিসেবে ভারত প্রস্তুত সুইজারল্যান্ডকে এসব সমস্যায় সহায়তা করতে।”
তবে শুধু সুইজারল্যান্ড নয়, পাকিস্তানও ভারতীয় সংখ্যালঘু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে। তারও কড়া জবাব দেয় ভারত। ক্ষিতীশ ত্যাগী বলেন, পাকিস্তান বারবার এই পরিষদকে রাজনৈতিক প্রচারের জন্য ব্যবহার করছে। ত্যাগী স্মরণ করিয়ে দেন পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির একাধিক হামলার কথা। যেমন পুলওয়ামা, উরি, পাঠানকোট, মুম্বই এবং সাম্প্রতিক পাহেলগাম হামলার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “আনন্দের জায়গাকে তারা হত্যার মাঠে পরিণত করেছে।”
তিনি পরিষদের ৬০ তম অধিবেশনের মঞ্চেই বিশ্বকে মনে করিয়ে দেন যে পাকিস্তান বহু বছর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়েছিল, যাকে মার্কিন সেনা অ্যাবোটাবাদে হত্যা করে। ত্যাগীর কঠোর মন্তব্য, “এক সন্ত্রাসের কারবারিদের থেকে আমরা কোনও শিক্ষা নেব না, সংখ্যালঘুদের নিপীড়কের কাছ থেকে কোনও উপদেশ নেব না, আর এমন এক রাষ্ট্রের কাছ থেকেও কোনও পরামর্শ নেব না, যারা নিজের বিশ্বাসযোগ্যতাই নষ্ট করে ফেলেছে।”
