সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, জামিন সংক্রান্ত আবেদনে অযথা বিলম্ব এক ধরনের অন্যায় এবং অভিযুক্তের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, ট্রায়াল কোর্ট ও হাইকোর্টকে দুই মাসের মধ্যে জামিন ও অগ্রিম জামিন সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে।
বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও আর মহাদেবনের বেঞ্চ বলেন, নাগরিকদের স্বাধীনতা দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা যায় না। বিশেষত বোম্বে হাইকোর্ট প্রায় ছয় বছর ধরে একটি অগ্রিম জামিন আবেদন ঝুলিয়ে রাখায় সুপ্রিম কোর্ট কড়া আপত্তি জানায়।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, “ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত আবেদন বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা যায় না। এমন দীর্ঘ বিলম্ব কেবল ফৌজদারি কার্যবিধির উদ্দেশ্যকেই ব্যর্থ করে না, ন্যায়বিচারের অস্বীকৃতি ও সংবিধানের ১৪ ও ২১ অনুচ্ছেদে প্রতিফলিত মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘনের সামিল।”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ—
•হাইকোর্টগুলো নিশ্চিত করবে যে জামিন ও অগ্রিম জামিন সংক্রান্ত আবেদন যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি হয়, সম্ভব হলে দাখিলের তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে।
•অধস্তন আদালতগুলোকেও প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক নির্দেশ দিতে হবে যাতে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত মামলাগুলো অগ্রাধিকার পায় এবং অযথা স্থগিতাদেশ না হয়।
•জামিন মঞ্জুরি বা প্রত্যাখ্যান সাধারণত প্রতিটি মামলার তথ্যের ওপর নির্ভর করে, তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য সিদ্ধান্ত বিলম্বিত রাখার কোনও যুক্তি নেই।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট এই পর্যবেক্ষণ করে এক মামলায়, যেখানে এক অভিযুক্তের অগ্রিম জামিন আবেদন ২০১৯ সালে বোম্বে হাইকোর্টে দাখিল হলেও তা নিষ্পত্তি হয় ২০২৫ সালে। যদিও সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে, তবুও এত বছর আবেদন ঝুলিয়ে রাখার জন্য হাইকোর্টের ভূমিকার সমালোচনা করেছে।
সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছে, “রাজ্যের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক ফোরাম হিসেবে হাইকোর্টগুলোকে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে জামিন সংক্রান্ত আবেদন জমে না থাকে এবং নাগরিকের স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘিত না হয়।”