হাতে গোনা আর ১৩ টা দিন, তারপরই সাড়ম্বরে শুরু হবে দুর্গোপুজো। বৃষ্টির ভ্রুকুটি নিয়েই মহানগরী কলকাতাকে সাজিয়ে তোলার কর্মকাণ্ড চলছে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তার ঢেলে সংস্কার ও জমা জল দ্রুত সরিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে।
গত কয়েকদিনে অপেক্ষকৃত কম বৃষ্টির সুবাদে রাস্তা মেরামতির কাজ চলেছে দ্রুত গতিতে। আর এই কাজ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালাতে উৎসবের দিনগুলিতে তাদের দুটি হট-মিক্স প্ল্যান্ট চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগ। বৃষ্টির জমা জলে কোথাও গর্ত দেখা দিলেই যাতে দ্রুত সেটি মেরামতি করা সম্ভব হয়।
কেএমসি সড়ক বিভাগের এক কর্তা বলেছেন, তাঁদের এমন প্রস্তুতি মূলত পুজোর দিনগুলোর কথা মাথায় রেখে। মণ্ডপে মণ্ডপে যাতায়াতের প্রধান সড়কগুলিতে যাতে কোথাও কোনও খানাখন্দ না থাকে। তিনি দাবি করেন, বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই শেষ করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং পুরসভার রাস্তার কাজের পর্যালোচনা করবেন।
কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগের আরও এক আধিকারিকের দাবি, উত্তর ও মধ্য কলকাতার রাস্তাগুলির মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁকুড়গাছি, মানিকতলা, এমজি রোড, এজেসি বোস রোড, এপিসি রায় রোড, বেলিয়াঘাটা মেইন রোড, শশী ভূষণ দে স্ট্রিট, সীতারাম ঘোষ রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বিডন স্ট্রিট এবং লেনিন সরণি তথা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার।
তিনি বলেন, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলির একটি তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ হয়েছে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ মেরামতির কাজই শেষ অথবা শেষের দিকে। মহানগরীর প্রধান রাস্তাগুলির সংস্কারের পাশাপাশি, কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগ ইএম বাইপাস এবং বেহালা ও টালিগঞ্জের কিছু অংশ মেরামতের দিকেও মনোনিবেশ করছে, যেখানে ড্রেনেজ আপগ্রেড কাজের জন্য রাস্তা খনন করা হয়েছিল।
জানানো হয়েছে, বেহালা, কুঁদঘাট এবং গড়িয়ার বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তা মেরামতের কাজ হাতে নিয়েছে কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগ। ওই রাস্তাগুলিতে গতকয়েক মাস ধরে খোঁড়াখুড়ির কাজ চলেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেগুলির মেরামতির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে পুরসভার সড়ক বিভাগের কর্তাদের প্রত্যাশা।
শুধু রাস্তা সংস্কারের কাজই নয়, কলকাতা পুরসভার মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ মহানগরীর Sewerage and Drainage ব্যবস্থা। শহরের ভূগর্ভস্থ নর্দমাগুলি বেশ বেহাল। এর উপর ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। পুজোর দিনগুলির কথা মাথায় রেখেই ইতিমধ্যে সেচবিভাগের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হয়েছে। ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশগুলির দিকে রয়েছে বাড়তি নজরদারি।
পুরসভার বিভাগীয় এক কর্তা বলেছেন, উল্টোডাঙ্গা, মানিকতলা, পামারবাজার, ধাপা লক, বালিগঞ্জ এবং মোমিনপুর সহ প্রধান ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশনগুলির সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে রাস্তায় জল জমলে, তা দ্রুত সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থাও তৈরি রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে পুজোর দিনগুলির কথা ভেবে আগাম যাবতীয় প্রস্তুতি তৈরি রাখছে কলকাতা পুরসভা।