এক্সপ্রেস ট্রেনের শৌচালয়ের মধ্যেই পৃথিবীর প্রথম আলো দেখল নবজাতক। কিন্তু তার পরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। দিশেহারা স্বামী তখন শৌচালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে কী করবেন ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না, সেই সময় এগিয়ে আসেন কামারকুন্ডু জিআরপির পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরাই মানবিক উদ্যোগ নিয়ে ট্রেন থামিয়ে মহিলা ও তার নবজাতক শিশুকে সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে আসেন। সোমবার রাতে হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইন শাখায় কামারকুন্ডু স্টেশনে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ- আলিপুরদুয়ারগামী আপ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে।
স্থানীয় ও জিআরপি সূত্রে জানা যায় রাত তখন ৯টা ৩৫। কামারকুন্ডু স্টেশনে সবে ঢুকেছে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস। একধারে তখন বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, অন্যদিকে ট্রেনের ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে। কামারকুন্ডু স্টেশনে তখন জিআরপি পুলিশ আধিকারিকরা ট্রেনগুলির লেডিস কামরায় তল্লাশি চালাচ্ছেন। এমন সময় কামারকুন্ডু জিআরপির ওসি শুভাশিস মুখোপাধ্যায় যাত্রীদের মুখে জানতে পারেন কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের শৌচালয়ে এক মহিলা তাঁর সন্তান প্রসব করেছেন। অসহায় অবস্থায় তাঁর স্বামী নয়ন মোল্লা শৌচালয়ের বাইরে অস্থিরভাবে ছোটাছুটি করছেন। এক মুহূর্ত দেরি না করে জিআরপি আধিকারিকরা মানবিক কারণে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে কামারকুন্ডু স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এরপর তিনি মহিলা পুলিশের সহযোগিতায় মা এবং তার সদ্যোজাত শিশুকে ট্রেনের শৌচালয় থেকে উদ্ধার করে ট্রেন থেকে নামান। নবজাতক ও তার মাকে স্টেশন থেকে স্ট্রেচারে করে স্টেশনের বাইরে নিয়ে এসে কামারকুন্ডু জিআরপি থানার গাড়িতে করে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানেই মা ও সদ্যোজাত শিশু চিকিৎসাধীন। শিশু ও মা দু’জনেই সুস্থ আছে।
জানা যায় নয়ন মোল্লা তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে যাচ্ছিলেন। ওই দম্পতি লেকটাউন থানার দক্ষিণদাড়িতে থাকেন। ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় হঠাৎই নয়নের স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তারপরই তাঁর স্ত্রী ট্রেনের শৌচালয়তেই সন্তান প্রসব করেন। নয়ন ও তার স্ত্রী দুজনেই কামারকুন্ডু জিআরপির পুলিশ কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। অন্যদিকে এলাকার সাধারণ মানুষ জিআরপির এই মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
Leave a comment
Leave a comment