দেশের কথা ভাবতে গিয়ে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্যও এবার বিশাল আর্থিক বোঝার পাঁচিল তুলে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসায় বার্ষিক ফি ১ লাখ ডলার করার একটি প্রোক্লেমেশনে স্বাক্ষর করেছেন। দক্ষ কর্মীদের জন্য এতদিন ভিসা ফি লাগত ২১৫ ডলার। এবার ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আমেরিকার বিখ্যাত টেক কোম্পানিগুলোকে দক্ষ বিদেশী কর্মী রাখতে খরচ করতে হবে বিপুল অর্থ। যার সরাসরি ধাক্কা লাগবে আমেরিকার দামি চাকরির বাজারে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ঠিক কী রকম সমস্যার হতে চলেছে? আসলে এইচ-১বি ভিসা মূলত উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মীদের জন্য, যেসব পদের জন্য মার্কিন টেক কোম্পানিগুলো স্থানীয় কর্মী খুঁজে পায় না। অথচ ভারত থেকে আসা বিদেশি কর্মীরা বছরে মাত্র ৬০ হাজার ডলার বেতনে কাজ করতেও রাজি হয়ে যান, যা মার্কিন টেক কর্মীদের গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম।
এই এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রাম অনেক ক্ষেত্রেই এন্ট্রি-লেভেল চাকরির জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে বেতন কাঠামো কম হওয়ায় অনেক মার্কিন কোম্পানি ভারতের উইপ্রো, ইনফোসিস, এইচসিএল ও টাটা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম ও কগনিজ্যান্টের মতো পরামর্শদাতা সংস্থাকে চুক্তিভিত্তিক কাজ দেয়। এইচ-১বি ভিসা লটারির মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ বছর অ্যামাজন সর্বাধিক ১০,০০০-এর বেশি ভিসা পেয়েছে, এরপর রয়েছে টিসিএস, মাইক্রোসফট, অ্যাপল ও গুগল। ক্যালিফোর্নিয়ায় সর্বাধিক এইচ-১বি কর্মী রয়েছে।
তবে ট্রাম্পের এই নিয়মের ফলে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসায় বার্ষিক ফি ১ লাখ ডলার করা হবে। অনেকের মতে, এই বেড়াজালে যদি বিদেশি প্রতিভা মার্কিন দেশে ঢুকতে না পারে তবে মার্কিন অর্থনীতিই আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অর্থাৎ সরাসরি বিদেশিদের আমেরিকায় কাজ করার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও, এইচ-১বি ভিসা পাওয়ার জন্য এত বিরাট অঙ্কের ফি ধার্য করলেন, যা অধিকাংশই দিয়ে উঠতে পারবেন না৷ ফলে মার্কিন সংস্থাগুলিও ভারতীয় সহ অন্য বিদেশিদের নিয়োগ করার বিষয়ে অনীহা দেখাতে বাধ্য হবে৷ তবে অনেকেই এর সমালোচনা করলেও মার্কিন শ্রমিক সংগঠন ইউএস টেক ওয়ার্কার্স বলেছে, এটি ভিসা প্রোগ্রাম পুরোপুরি বন্ধ করার ‘পরবর্তী সেরা পদক্ষেপ’।