উত্তর কলকাতার প্রাচীনতম বারোয়ারি দুর্গাপুজোগুলির অন্যতম কাশী বোস লেন। ২০২৫ সালে তাদের পুজোর থিম “পাকদণ্ডী”। চোখধাঁধানো প্যান্ডেল আর অসাধারণ শিল্পকর্ম ভিড়ের নজর যে কাড়বে তা এখন থেকেই বলা যায়। পুজো উদ্যোক্তারা এবার কথা সাহিত্যিক লীলা মজুমদারকে শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়েছে তাঁদের অভিনব মণ্ডপ সজ্জা ও শিল্পকর্ম দিয়ে। রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত ”পাকদণ্ডী” লীলা মজুমদারেরই সৃষ্টি।
সেই ১৯৩৭ সালে শুরু হয়েছিল কাশী বোস লেনের সর্বজনীন দুর্গাপুজো। শতবর্ষ পার করে আজও সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রতিবছরই ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা যোগ করে চলেছে এই বারোয়ারি পুজো। এঁদের
প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন থিমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয় মণ্ডপ। যেখানে সমাজের বিভিন্ন দিক, যেমন নারীশক্তি, ঐতিহাসিক ঘটনা বা মনীষীদের জীবন তুলে ধরা হয়। সেই সাযুজ্য বজায় রেখেই এবার লীলা মজুমদারকে তুলে ধরা হয়েছে।
কথা সাহিত্যিকের গল্পের চরিত্রগুলিকে ফুটিয়ে তুলেছে ছবি এবং পুতুল নাটক এর মধ্যে দিয়ে। পুজোর উৎসবমুখর পরিবেশকে যা আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে প্রত্যাশা পুজো উদ্যোক্তাদের। প্যান্ডেল হপাররা এখানে এলে দেখতে পাবে এক প্রতীকী ট্রেন যাত্রা, যেখানে মা দুর্গা তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে চলেছে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে। ট্রেনে ছোট্ট গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, অসুর সহ সিংহীও হাজির নিজেদের বাক্স পোঁটরা নিয়ে।
দুষ্টু কার্তিক ট্রেনে কিন্তু চুপচাপ বসে থাকার ছেলেই নয়। সে লক্ষ্মী-সরস্বতীর নিষেধকে উড়িয়ে জানলা থেকে হাতি বাড়িয়েছে সূর্যের আলোকে মুঠোবন্দি করতে চেয়েধরবে বলে। মা দুর্গার এসবের দিকে খেয়ালই নেই, তিনি ব্যাস্ত তাঁর বার্মিজ বাক্স খুলে খাবার-দাবার বের করতে। লম্বা সফরে ছানাপোনাদের খিদে পাওয়াটা তো স্বাভাবিক। পেটুক গণেশ কাঠি লজেন্স পেয়ে বেজায় খুশি। মুখে ভরেই মাথা দুলিয়ে হাসি হাসি মুখে মাকে জড়িয়ে ধরেছে।
উৎসবের আনন্দ, হাসি এবং খেলার মিশেলে একটা স্বপ্নের জগৎ তৈরি করেছে। যেমনটি রয়েছে লীলা মজুমদারের সৃষ্টি নানান গল্পে। কাশী বোস লেনের পুজো প্রতি বছরই নানান পুরস্কারে সম্মানিত হয়। আর ভিড় টানার অঙ্কে টেক্কা দেয় উত্তর কলকাতার অন্যান্য সর্বজনীন পুজোগুলিকে। উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা এবারে তাঁদের সেই রেকর্ড অটুট থাকবে।