সরকারি কর্মীদের ডিএ ঘিরে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল রাজ্য। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতোই, সোমবার রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বাল হলফনামা জমা দেন বিচাপরতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলির ডিভিশন বেঞ্চে। জানানো হয়েছে, দেশের ২৮ টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আরও ১২ টি রাজ্য কেন্দ্রীয় হারে তাদের সরকারি কর্মীদের ডিএ তথা মহার্ঘ ভাতা দেয় না।
ডিভিশন বেঞ্চে হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ফের দাবি করেন, ডিএ সরকারি কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। তিনি সংবিধানের ৩০৯ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে বলেছেন, নিজেদের কর্মীদের বেতন ও ভাতা নির্ধারণ করার অধিকার রয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যেরই। ডিভিশন বেঞ্চে জানানো হয়, কেরল, ছত্তিসগড়, হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, তেলেঙ্গানা এবং ত্রিপুরা তাদের সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেয় না।
প্রসঙ্গত, ১২ টি রাজ্যের মধ্যে কেরলে বাম সরকার, কর্নাটক ও হিমাচল এবং তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস শাসিত সরকার ক্ষমতায়। অন্যদিকে ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়ে কিন্তু বিজেপি শাসিত সরকারই ক্ষমতায়। কেন্দ্র এবং রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামো ভিন্ন হওয়ার উদাহরণ দিয়ে তুলনা না টানার কথাও উল্লেখ করেছেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বাল।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে এরাজ্যের সরকারী কর্মীদের সংগঠনগুলি। আর তা নিয়ে মামলা হয়েছে ট্রাইবুনাল থেকে কলকাতা হাইকোর্টেও। হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চও মামলাকারী কর্মী সংগঠনের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে। সেই মামলা পরবর্তীতে আসে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে রাজ্যকে বকেয়া ডিএ-এর ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ না মেনেই বাড়তি সময় চেয়ে ফের আবেদন জানিয়েছে। অন্যদিকে মামলাকারী সংগঠনগুলির দাবি, নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দেওয়া সরকারের নীতির মধ্যেই পড়ে। কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দিতে হবে। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।
সোমবার রাজ্য তাদের হলফনামা ডিভিশন বেঞ্চে জমা দিয়েছে। এবার মামলাকারী কর্মী সংগঠনগুলিও তাদের বক্তব্য জানানোর সময় পাবে। দুপক্ষের বক্তব্য ডিভিশন বেঞ্চে পেশ হওয়ার পর রায়দান করতে পারে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর ডিএ মামলার যাবতীয় শুনানি পর্ব শেষ হয়েছিল। কিন্তু তখন রায়দান স্থগিত রেখে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল ডিভিশন বেঞ্চ।