কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ১৯৯৩ সালের কুখ্যাত বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মহম্মদ খালিদের ‘অকাল মুক্তি’ দেওয়ার একক বেঞ্চের আদেশ খারিজ করেছে। ওই বিস্ফোরণে প্রায় ৭০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ বলে, খালিদের মুক্তির আবেদন খারিজ করে রাজ্যের ‘সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ড’ যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিভিউ বোর্ড ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারের আপত্তি, অপরাধের প্রকৃতি এবং খালিদের অতীত জীবন ও দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজশ বিবেচনা করে সর্বসম্মতভাবে মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কলকাতা পুলিশও তার মুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছিল।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ খালিদের অকাল মুক্তির নির্দেশ দেয়। তবে রাজ্যের আবেদনে ওই রায়ের কার্যকারিতা চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরে রাজ্য সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে।
খালিদ ছিল কুখ্যাত আসামি ও মূলচক্রী রশিদ খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। পুলিশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, মুক্তি পেলে সে ফের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। মামলার সাক্ষীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভীত বলেও জানানো হয়।
১৯৯৩ সালের ১৬ মার্চ রাতে মধ্য কলকাতার বউবাজারে একটি বাড়িতে বিপুল পরিমাণে মজুত রাখা বোমা ফেটে যায়। ভয়াবহ বিস্ফোরণে গোটা বাড়িটাই ধসে পড়ে এবং প্রায় ৭০ জন মারা যান। তদন্তের শেষে রশিদ খান ও পাঁচজন সহযোগীকে টাডা আইনে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করেছে, “রিভিউ বোর্ডের নেওয়া সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত এবং এটিকে অযৌক্তিক বা ক্ষমতার অপব্যবহার বলা যায় না। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনও ত্রুটি হয়নি।”