একদিকে জিএসটি-তে ছাড়, অন্যদিকে পুজোর বিশেষ অফার। আর তাতেই কলকাতায় কেনাকাটায় যেন বাঁধ ভেঙেছে। সোমবার থেকেই শহরের শপিং হাবগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। জিএসটি-এর হার কমার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দোকানে উৎসবের মরসুমের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়ায় কেনাকাটার পরিমাণ তিন গুণ বেড়েছে বলে জানা গেছে।
দোকানদাররা বলছেন, জিএসটি-র হার কমার ঘোষণার পর থেকে ক্রেতারা জিনিসপত্র কেনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এখন সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। ক্রেতারা পোশাক থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, সবকিছুই কিনছেন প্রাণ ভরে।
দমদমের এক বাসিন্দা একটি এলইডি টিভি কিনতে এসপ্ল্যানেডে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “গত মাসে আমরা টিভির দাম দেখেছিলাম, কিন্তু দাম কমার অপেক্ষায় ছিলাম। তখন যে টিভিটার দাম ২১,৫০০ টাকা ছিল, এখন জিএসটি ছাড় এবং ডিসকাউন্টের পর সেটার দাম ১৬,০০০ টাকা।”
জিএসটি-র নতুন হার অনুযায়ী, এসি, ৪৩ ইঞ্চি বা তার বেশি মাপের এলইডি টিভি এবং ডিশওয়াশারের উপর কর ২৮% থেকে কমে ১৮% হয়েছে। অন্যদিকে, ২৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের পোশাকের উপর কর ১২% থেকে কমে ৫% হয়েছে।
হুগলির চুঁচুড়ার এক বাসিন্দা লিন্ডসে স্ট্রিটের একটি দোকান থেকে একটি জিন্স এবং একটি কুর্তি কিনে ৫০০ টাকা বাঁচিয়েছেন। তিনি বলেন, “ট্যাক্স কমার জন্য প্রতিটি আইটেমে ১৫০ টাকা করে ছাড় পেয়েছি। এছাড়াও দোকান থেকে আরও ২০০ টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে।”
টালিগঞ্জের এক বাসিন্দা অনেক দিন ধরেই একটি এসি কেনার কথা ভাবছিলেন। তিনি বলেন, “আজকে এসিটা কিনলাম এবং এতে ৩,০০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।” ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর বিক্রেতারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে ৫০% পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে।
বিবাদী বাগের খোসলা ইলেকট্রনিক্স-এর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রাজেশ রায় জানান, “গত কয়েক সপ্তাহে আমাদের কাছে অনেক ক্রেতা এসি বা এলইডি টিভি দেখতে এসেছিলেন, কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় চলে গিয়েছিলেন। আজ তাঁরা আবার ফিরে এসেছেন। বিক্রি প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।”
কিডসকেয়ার এবং ওয়েলফিট-এর মতো পোশাক ব্র্যান্ডের ডিরেক্টর দেবেন্দ্র বাইদ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে মানুষ শুধু জিনিসপত্র দেখছিল এবং দাম জেনে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু জিএসটি ছাড়ের কারণে এখন বিক্রি তিন গুণ বেড়েছে।” এই অপ্রত্যাশিত বিক্রিবাটায় খুচরো বিক্রেতারা আশাবাদী যে দুর্গাপুজোর আগের এই ক’দিনে তাদের ব্যবসার অনেক উন্নতি হবে।