শেষকৃত্য সম্পন্ন হল অসমের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের। মঙ্গলবার গুয়াহাটি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কামারকুচি গ্রামে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে বিদায় জানানো হয়। প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে লাখো ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়েছিলেন।
শিল্পীর নশ্বর দেহ গুয়াহাটির অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে একটি ফুল দিয়ে সাজানো অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। এই কমপ্লেক্সে গত দুদিন ধরে বহু মানুষ জুবিনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাঁর ৮৫ বছর বয়সী বাবা, স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গ এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও গায়কের শেষযাত্রায় অংশ নেন। প্রিয় শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার ভক্ত তাঁর গান গাইতে গাইতে মিছিলের সঙ্গে হেঁটেছেন। তাঁর দেহ ঐতিহ্যবাহী অসমিয়া গামছা দিয়ে আবৃত করে একটি ঠান্ডা কাচের কফিনে রাখা হয়েছিল।
প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, জুবিন গর্গের বোন পালমী বড়ঠাকুর তাঁর মুখাগ্নি করেন। সেই সময় গায়কের ভক্তরা তাঁর নামে স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়া, জুবিনের একটি জনপ্রিয় গান, ‘মায়াবিনী’ বাজানো হয়। শোনা যায়, জুবিন নাকি এই গানটিকে তাঁর খুব কাছের বলে মনে করতেন। এমনকি তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তাঁর শেষকৃত্যের সময় যেন এই গান বাজানো হয়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে ৫২ বছর বয়সে মারা যান জুবিন গর্গ। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসে স্কুবা ডাইভিংয়ে মৃত্যুর তত্ত্ব। আরেকটা কারণ অনেকেই বলেন, সাঁতার কাটার সময় খিঁচুনি শুরু হয়। তখনই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রিয় গায়কের এই আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা অসম শোকস্তব্ধ। শোকে মুহ্যমান সারা দেশের মানুষ। জুবিনের প্রতি সম্মান জানিয়ে মঙ্গলবার অসমের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত করছে অসম সিআইডি।
জুবিন গর্গের মৃত্যুতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি শোক জ্ঞাপন করেছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক জানিয়েছেন, সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁর পরিবারকে।