লাদাখের লেহ শহরে বুধবার সকালে পূর্ণরাজ্যের দাবিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছোড়েন এবং একটি পুলিশ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। চলতে থাকা আন্দোলনে এটাই প্রথম বড় সহিংস ঘটনা।
এদিন শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। এর অংশ হিসেবে তারা অবস্থান ধর্মঘট ও সম্পূর্ণ বনধ পালনের ডাক দেন।
ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা লেহ-তে বিজেপি অফিসে হামলা চালান, পুলিশের ওপর ইট-পাথর ছোড়েন এবং পুলিশ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় ও লাঠিচার্জ করে।
লাদাখে সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের সহিংসতার নজির নেই। সংঘর্ষটি ঘটল এমন এক সময়ে, যখন আগামী ৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে লাদাখের প্রতিনিধিদের বৈঠকে বসার কথা।
গত দু’সপ্তাহ ধরে পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে।
২০১৯ সালের আগস্টে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর জম্মু-কাশ্মীর ভেঙে লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। তখন অনেকেই, বিশেষ করে লেহ-র বাসিন্দারা, এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও অল্প সময়ের মধ্যেই রাজনৈতিক শূন্যতা, জমি ও সংস্কৃতি রক্ষার অভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে।
এ অসন্তোষ থেকে বড় আন্দোলনের জন্ম হয়, যেখানে লেহ-এর বৌদ্ধ অধ্যুষিত অঞ্চল ও কারগিলের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো একত্রিত হয় ‘এপেক্স বডি অব লেহ’ ও ‘কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’-এর যৌথ মঞ্চে।
যদিও কেন্দ্রীয় সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে একাধিক দফায় আলোচনা করলেও কোনও সমাধান মেলেনি। চলতি বছরের মার্চে লাদাখের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, কিন্তু বৈঠক ব্যর্থ হয়। স্থানীয় নেতাদের দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের মূল দাবি পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তি সরাসরি নাকচ করে দেন।
লাদাখে আন্দোলন ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে, আসন্ন বৈঠকের আগে সহিংসতার এই ঘটনা রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে আরও জটিল করে তুলল।