জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকায় নাম ঢোকাতে, সংশোধন বা নাম মুছে ফেলার আবেদন প্রক্রিয়ায় ই-সাইন সুবিধা চালু করল। এই সুবিধা পাওয়া যাবে ইসিনেট পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে। আবেদনকারীদের এখন থেকে আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বর দিয়ে নিজের পরিচয় প্রমাণ করতে হবে।
এই পদক্ষেপ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাম্প্রতিক অভিযোগের প্রেক্ষাপটে এসেছে। তিনি দাবি করেছিলেন, কর্নাটকের আলন্দ বিধানসভা আসনে প্রায় ৬ হাজার ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে মুছে দেওয়া হয়েছিল। সফটওয়্যারের সাহায্যে প্রকৃত ভোটারদের ছদ্মবেশ ধারণ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ।
তবে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, “কোনও ভোটারের নাম তাঁর অজান্তে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় না। নোটিস জারি করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আপত্তি জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়।”
কীভাবে কাজ করবে ‘ই-সাইন’?
কমিশন সূত্রে খবর, আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ফর্ম-৬ বা মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়ার জন্য ফর্ম-৭ জমা দিতে হলে শুধু একটি ফোন নম্বরকে ভোটার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করলেই চলত।
এখন থেকে তথ্য পূরণের পর আবেদনকারীকে ‘সিড্যাক’ (সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ অ্যাডভান্সড কমপিউটিং)-এর বহিরাগত ই-সাইন পোর্টালে রিডাইরেক্ট করা হবে। সেখানে আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠিয়ে পরিচয় যাচাই করা হবে। সফল প্রমাণীকরণের পর আবেদনকারীকে আবার নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ফিরিয়ে আনা হবে।
আলন্দ কাণ্ডে কমিশনের ব্যাখ্যা:
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আলন্দ আসনে মোট ৬,০১৮টি নাম মুছে দেওয়ার আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ২৪টি বৈধ বলে প্রমাণিত হয়, বাকি ৫,৯৯৪টি বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় কমিশন নিজেই এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
১৯৬০ সালের ‘রেজিস্ট্রেশন অফ ইলেক্টরস রুলস অনুযায়ী’, কাউকে না জানিয়ে তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে মুছে দেওয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবশ্যই নোটিস পাঠানো হয় এবং নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়।