নামেই মার্কিন টেক সংস্থা, অথচ চাকরির বাজারের সিংহভাগই দখল করে বসে আছে ভারত ও চিনের প্রতিভাবান দক্ষ কর্মীরা। এবার তাদের কায়দা করে সরিয়ে সেখানকার ভূমিপুত্র বা আমেরিকান কর্মীদের চাকরি দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাত্র কয়েক দিন আগে এইচ-১বি ভিসা পেতে আকাশছোঁয়া ফি ঘোষণা করার পর এবার এই প্রোগ্রামের নিয়মে বড় ধরনের সংশোধনের প্রস্তাব করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রচলিত লটারি সিস্টেম বাতিল করে ‘ওয়েটেড সিলেকশন প্রসেস’ চালু করা হবে, যা মূলত বেশি দক্ষ ও বেশি মাইনে পাওয়া বিদেশি কর্মীদের অগ্রাধিকার দেবে। তবে সব স্তরের কর্মীদের জন্যই সুযোগ রাখা থাকবে। প্রস্তাব অনুসারে, নির্বাচনের ভিত্তি হবে কর্মীর মাইনের কাঠামো। চার রকমের বেতন স্তরের মধ্যে যাদের বার্ষিক বেতন প্রায় ১,৬২,৫২৮ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৯৭ টাকা) তারা সর্বোচ্চ স্তরে থাকবেন। এঁদের নাম নির্বাচনের পুলে চারবার অন্তর্ভুক্ত হবে। বিপরীতে, সর্বনিম্ন মাইনের স্তরে (৬০ থেকে ৭০,০০০ ডলার বছরে) থাকা কর্মীদের নাম মাত্র একবার অন্তর্ভুক্ত হবে।
এই প্রস্তাব মার্কিন দেশে গোটা পৃথিবী থেকে প্রতিভাধর কর্মীদের আসার ধরনটাই বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন মেটা কোনও দক্ষ প্রযুক্তিবিদকে ১,৫০,০০০ ডলার বেতনের চাকরি দিলে, তার একাধিকবার নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে। কিন্তু কোনও স্টার্টআপে কর্মরত এক জুনিয়র ডেভেলপার যদি ৭০,০০০ ডলার মাইনে পান, তার সুযোগ থাকবে মাত্র একবার। এর ফলে বড় কোম্পানিগুলো লাভ পেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে তরুণ আন্তর্জাতিক প্রতিভার উপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলো। ফলে অনেক মাইনের সিনিয়র পদের প্রার্থীদের নির্বাচনের সম্ভাবনা বাড়লেও সদ্য গ্র্যাজুয়েট এবং কর্মজীবনের শুরুতে থাকা প্রার্থীদের সুযোগ অনেকটাই কমে যাবে। আর সেখানেই কপাল খুলবে মার্কিনিদের।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র টেলর রজার্স বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকান কর্মীদের প্রথমে রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই পদক্ষেপ সেটাই করছে। আর এই খবর তখনই সামনে এল যখন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরেই রয়েছেন।