নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত
সামনে নির্বাচন। তার উপর এসআইআর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এমন পরিস্থিতিতে শক্তিতে অনেকটা পিছিয়ে থেকেও ময়দানে নেমে পড়ল বঙ্গ কংগ্রেস। দলের বার্তা মানুষের কাছে আরও জোরদারভাবে পৌঁছে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
‘মুখপাত্র সন্ধান’ নামে এক ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে রাজ্যজুড়ে ৭০ জন নতুন মুখ বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে থাকছেন ১৫ জন মুখপাত্র, ১৫ জন টিভি প্যানেলিস্ট এবং বাকিরা কাজ করবেন রিসার্চ ও পাবলিসিটি টিমে। কর্পোরেট স্টাইলে করা এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচিতদের নিয়ে বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে বৈঠকও হয়। বৈঠকের সময় নির্বাচিতদের মোবাইল জমা দিতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করতে দিল্লি থেকে আসেন এআইসিসি মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর মহিমা সিং।
নির্বাচিতদের মধ্যে যারা এক বছরের কম সময় দলে আছেন, তাঁদের আপাতত মুখপাত্র বা প্যানেলিস্ট করা হবে না। তাঁদের রিসার্চ বা পাবলিসিটি টিমে কাজ করতে হবে। পরবর্তী সময়ে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তাঁরা প্যানেলিস্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন। দশমীর পর এআইসিসি’র অনুমোদন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকা ঘোষণা হবে।
বিশেষ নজর কেড়েছে, নির্বাচিতদের মধ্যে দুজন আগে কখনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ থেকেই এই উদ্যোগ শুরু হলেও আগামী দিনে অসম ও বিহারেও চালু হবে এই ‘মুখপাত্র সন্ধান’। গোটা দেশেই ধাপে ধাপে প্রসারিত হবে কর্মসূচি।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কিছু পুরনো মুখ এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি। মহিমা সিং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যারা অংশ নেননি তাঁদের আর কোনও বিকল্প ভাবা হবে না। রাহুল গান্ধীর নির্দেশেই পদ্ধতিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি ন্যাশনাল মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি চেয়ারম্যান পবন খেরাকেও নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হয়েছে।
তবে পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অধীর চৌধুরীর সময়ে মুখপাত্র থাকা মাত্র তিনজনকে হাতে-কলমে পরীক্ষা দিতে হয়েছে, বাকিরা শুধু নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। এছাড়া মুখপাত্র সন্ধান কমিটির তালিকায় অনেক অভিজ্ঞ মুখপাত্রকে রাখা হয়নি বলেও অভিযোগ।
তবু একথা স্পষ্ট, এবার জেলা থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত মুখপাত্র বা প্রচারক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। ৭০ ‘মুখ’ নিয়েই তাই ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে বাংলার কংগ্রেস।