লাদাখের এনজিও ‘স্টুডেন্ট এডুকেশন এন্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ’ (সেকমল)-এর এফসিআরএ লাইসেন্স বাতিল করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। উল্লেখযোগ্যভাবে এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হলেন সুপরিচিত পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক।
বুধবার লাদাখের পূর্ণরাজ্যের দাবিকে ঘিরে আন্দোলন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। লেহ-তে বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ করে, বিজেপি কার্যালয় ও হিল কাউন্সিল অফিসে হামলা চালায় এবং একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অন্তত ৮০ জন, যার মধ্যে ৪০ জন নিরাপত্তাকর্মীও রয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে এবং পরে কারফিউ জারি করা হয়।
কেন্দ্রের অভিযোগ, সোনম ওয়াংচুকের অনশন ও “উস্কানিমূলক” বক্তৃতা জনতাকে উত্তেজিত করে তোলে।
বক্তৃতায় তিনি ‘আরব বসন্ত’ ও নেপালের জেন-জেড আন্দোলনের প্রসঙ্গ টানেন, যা আন্দোলনকারীদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয় বলে দাবি করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এতে বিজেপি ও সরকারি দফতরে হামলা, সম্পত্তি নষ্ট এবং ৩০ জনের বেশি পুলিশ ও সিআরপিএফ কর্মী আহত হন।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিক্রিয়ায় সোনম ওয়াংচুক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এটা নিছক বলির পাঁঠা বানানোর কৌশল। সমস্যার মূল কারণ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমাকে বা কংগ্রেসকে দোষ দিয়ে কিছু হবে না।” তিনি আরও জানান, জনসুরক্ষা আইন-এর অধীনে গ্রেফতারের জন্য তিনি প্রস্তুত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, সোনমের সংগঠন বারবার এফসিআরএ আইন লঙ্ঘন করেছে। সংগঠনের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগগুলি হল –
•অবৈধ জমা (২০২১-২২): ৩.৫ লাখ টাকা এনজিওর এফসিআরএ অ্যাকাউন্টে জমা, যা আইনবিরোধী।
•লোকাল ফান্ড জমা (২০২০-২১): তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ৫৪,৬০০ টাকা স্থানীয় অনুদান এফসিআরএ অ্যাকাউন্টে জমা।
•বিদেশি তহবিল দিয়ে সার্বভৌমত্ব নিয়ে গবেষণা: একটি সুইডিশ সংস্থার থেকে প্রায় ৪.৯৩ লাখ টাকা নিয়ে “সার্বভৌমত্ব” সম্পর্কিত গবেষণা চালানো হয়, যা জাতীয় স্বার্থবিরোধী বলে দাবি মন্ত্রকের।
•অনুদান ফেরত দেওয়া (১৯,৬০০ টাকা): একজন দাতাকে টাকা ফেরত, যা আইনে অনুমোদিত নয়।
•অডিটে গরমিল: বিদেশি অনুদানের ৭৯,২০০ টাকা রিপোর্ট করা হলেও অ্যাকাউন্টে জমা দেখানো হয়নি।
মন্ত্রক জানিয়েছে, উল্লিখিত অনিয়মগুলির ভিত্তিতে, এফসিআরএ-এর ১৪(১) ধারা অনুযায়ী সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে।