প্রথমে রসিকতা করলেও পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘে তিনি যেতেই ঘটে যাওয়া নানা ঘটনায় রেগেই গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ইউনাইটেড নেশনসের সদর দফতরে ঘটে যাওয়া একাধিক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই ঘটনাগুলির তদন্তে সিক্রেট সার্ভিসকে যুক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার জন্য গেলে ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এসকালেটরে উঠতেই এটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে দুজনকেই হেঁটে ওপরে উঠতে হয়। এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায় মিডিয়া মহলে। যদিও ট্রাম্প নিজে এই বিষয়টি নিয়ে রসিকতা করেন। ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, “রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে আমি পেয়েছি একটি খারাপ এসকালেটর আর একটি খারাপ টেলিপ্রম্পটার।” তিনি আরও বলেন, “যদি ফার্স্ট লেডির শরীর ভাল না থাকত তবে তিনি পড়ে যেতেন, কিন্তু তিনি খুব ফিট।” এই মন্তব্যে শ্রোতারা হাসিতে ফেটে পড়েন।
তবে সেই রসিকতা ক্ষোভে পরিণত হতে সময় লাগেনি। ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তাঁর সফরের সময় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা ও প্রযুক্তিগত সমস্যার বর্ণনা দেন। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রসঙ্ঘে একাধিক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই ঘটনাগুলির তদন্তে সিক্রেট সার্ভিসকে যুক্ত করা হবে।
এসকালেটর হঠাৎ থেমে যাওয়ার ঘটনাকে ট্রাম্প “পরিষ্কার নাশকতা” আখ্যা দেন এবং দাবি করেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের কর্মীরা অতীতে এসকালেটর বন্ধ করা নিয়ে মজা করেছেন। এরপর ট্রাম্প জানান, বক্তৃতা করার সময় তার টেলিপ্রম্পটার আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। শেষে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, অডিটোরিয়ামের সাউন্ড সিস্টেম বিকল হয়ে যায়, ফলে বিশ্বনেতারা কানে ইয়ারপিস ছাড়া তার বক্তৃতা শুনতে পারেননি।
তবে ট্রাম্প পরে সরব হলেও মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এসকালেটর থেমে যাওয়ার ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেন এবং ইঙ্গিত দেন এটি নিছক প্রযুক্তিগত ত্রুটি নাও হতে পারে। লেভিট এক্স-এ লেখেন “যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি ওঠার সময় এসকালেটর বন্ধ করে থাকে, তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত ও তদন্ত করা উচিত।”
তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন তিনি রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবকে একটি চিঠি পাঠাবেন এবং এই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানাবেন। ‘সিক্রেট সার্ভিস’-এর তদন্ত শুরুর কথাও জানিয়ে দেন তিনি। তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রথম থেকেই কোনও চক্রান্তের তত্ত্ব অস্বীকার করেছে। সংস্থার মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক জানান যে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ট্রাম্পের ডেলিগেশনের এক ভিডিয়োগ্রাফার, যিনি প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির আগে এসকালেটরে উঠেছিলেন, সম্ভবত অসাবধানতাবশত সেফটি মেকানিজম চালু করে দেন। আর তাতেই বন্ধ হয়ে যায় চলমান সিঁড়িটি।