সিপিএম শুরু করেছিল বহু আগেই। বিগত কয়েক বছরে সেই পথে সামিল হয়েছে তৃণমূল, এই বছর বিজেপিও মন দিয়েছে পুজো প্যান্ডেলের সামনে বইয়ের স্টল দিতে। দুর্গাপুজো ঘিরে মণ্ডপপ্রাঙ্গণ এখন কেবল ভক্তি-আনন্দের কেন্দ্র নয়, রাজনৈতিক লড়াইয়েরও মঞ্চ। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম তিন দলের মুখপত্র এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো বইয়ের স্টল সাজিয়ে তুলছে নিজেদের দলীয় আদর্শ ও এজেন্ডার বার্তা ছড়িয়ে দিতে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো উদ্বোধনের সময় কেন্দ্রের তহবিল স্থগিত ও বাংলাভাষী শ্রমিকদের আটক নিয়ে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিকে নিশানা করেছেন।
দলের মুখপত্র জাগো বাংলা জানিয়েছে, জেলার প্রতিটি পুজো মণ্ডপের বাইরে বইয়ের স্টল বসানো হবে। জাগো বাংলার সম্পাদক ও মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী শতাধিক বই লিখেছেন। এবারের পুজো সংখ্যাও প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি সমসাময়িক নানা বিষয়ে লেখা বই থাকবে।”
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমরা তো বিধায়ক না থাকলেও বইয়ের স্টল বসিয়েছি। এ বছরও কলকাতা ও জেলায় স্টল হবে।” বিজেপি সরকারের কাজকর্ম, সিএএ আইন এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও আরএসএস-এর উপর লেখা বই বিক্রি হবে। তিনি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, “মমতা প্রতিটি পুজো কমিটিকে ১.১০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। দেখা যাক ৪৫ হাজার মণ্ডপের বাইরে স্টল বসাতে পারেন কিনা।”
বিধানসভায় একেবারে শূন্য হলেও দুর্গাপুজোর সময় বই বিক্রির অগ্রদূত হিসেবে সিপিএম এখনও সক্রিয়। দলের মুখপত্র গণশক্তি ও ন্যাশনাল বুক এজেন্সি (এনবিএ) এই বছর অন্তত ১,২০০টি স্টল বসাবে। এনবিএর ডিরেক্টর অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী জানান, “রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের প্রবন্ধ সংকলন, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রর বই এবং শিক্ষাব্যবস্থার সংকট নিয়ে নতুন বই প্রকাশ হয়েছে। পাশাপাশি জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুরনো বই পুনর্মুদ্রণ হচ্ছে।”
মঙ্গলবারের ভারী বৃষ্টিতে কলকাতার বহু মণ্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জল সরে যাওয়ার পর ফের জমে উঠেছে পুজো প্রস্তুতি, আর সেই প্রস্তুতির মাঝেই আরও তীব্র হচ্ছে ‘বই বনাম বই, মতাদর্শ বনাম মতাদর্শ’র লড়াই।